আধুনিক মানব সভ্যতার পাঠ্যক্রমে প্রতিষ্ঠিত সত্য; আদর্শ-নীতিবিবর্জিত ও ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে রাজনীতিকে যারা জীবন প্রবাহের বাহন হিসেবে নির্ধারণ করেছে, জাতির ভাগ্য পরিবর্তনে তাদের পক্ষে কোন কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ-বাস্তবায়ন নিতান্তই অসম্ভব। জাতির সামগ্রিক উন্নয়নধারাকে নানাবিধ অপকৌশলে তারা বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রাখবে, এটিই স্বাভাবিক ও অনস্বীকার্য। স্বাধীনতা প্রাপ্তির অব্যাহতির পরেই দেশ গড়ার প্রাথমিক পর্যায় থেকে নিরন্তর বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও আদর্শকে পরিপূর্ণ ধারণ করে মহান স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার প্রায়োগিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাঙ্গলিক মহোৎসবের মাহেন্দ্রক্ষণে মুক্তির মহানায়ক স্বাধীন মাতৃভূমির স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
দেশবাসী সম্যক অবগত আছেন যে, ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ জানুয়ারি তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে ১২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির পদে ইস্তফা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও তাঁর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনার মূলমন্ত্র ছিল শোষণমুক্ত জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এরই আলোকে ১৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ অক্ষুণ্ন রেখে সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। ঠিক পরের দিন রমনা রেসকোর্স ময়দানকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে নামাকরণের ঘোষণা এবং সরকারি আদেশে মদ, জুয়া, হাউজিসহ ইত্যাদি অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেন।
১৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালের হাইকোর্ট অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে হাইকোর্ট গঠন করেন। দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ২১ জানুয়ারি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেন। ২৪ জানুয়ারি পাক-সামরিক জান্তাদের সহযোগী হয়ে এদেশে যারা মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন মানবতা বিরোধী অপরাধকর্মে জড়িত বা দালালি করেছে, তাদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি মুক্তি ও মুজিব বাহিনীর সকল সদস্যবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর নিকট তাঁদের রক্ষিত অস্ত্রসমর্পণ করে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণের ঘোষণা দেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতির উদ্দেশ্যে বেতার ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘শোষণমুক্ত সোনার বাংলা কায়েমই আমাদের লক্ষ্য’।
বঙ্গবন্ধুর ৫৩তম জন্মদিন অর্থাৎ ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনন্দিত গণতন্ত্রের ভারতকন্যা প্রয়াত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সফরে ঢাকায় আসেন এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২৫ বছরের জন্য শান্তি, সহযোগিতা ও মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২৬ মার্চ দেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন এবং সকল ব্যাংক, বীমা ও বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ঘোষণা করা হয়। ৮ মে সারা দেশে কবিগুরুর জন্মদিন যথাযথ মর্যাদায় পালন এবং ২৪ মে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামকে ঢাকায় নিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু তাঁর পরিবারকে একটি ভবন ও রাষ্ট্রীয় ভাতা মঞ্জুর করে ২৫ মে এই বিদ্্েরাহ কবির উপস্থিতিতে অত্যন্ত আড়ম্বর পরিবেশে তাঁর জন্মদিন পালন করা হয়।
ধর্মান্ধ নয়; বিশ্বের সকল ধার্মিক ও মনুষ্যত্ব-মানবিকতায় পরিশুদ্ধ মানুষ মাত্রই কালান্তরে গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পিছনে যাদের সক্রিয় অবদান-প্রাণবিসর্জন রয়েছে, অকৃত্রিম শ্রদ্ধা-কৃতজ্ঞতায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তাদের স্মরণ করে থাকেন। যথার্থ অর্থে তাদের সুনাম-সম্মানকে সমাসীন করা না হলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আলোকিত ভবিষ্যত নির্মাণ অবশ্যই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। অন্যথায় পরাজিত অন্ধকারের অশুভ শক্তি বিজয়ের আনন্দবার্তা ও গৌরবোজ্জল পটভূমিকে শুধু কলুষিত করবে না; নানা অপকৌশলে বিকৃত ইতিহাসপাঠে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সকল নষ্ট সম্ভাবনাকে ঘৃণ্য পন্থায় কাজে লাগাবে। প্রাসঙ্গিকতায় স্মরণযোগ্য অবিচ্ছেদ্য অধ্যায় হিসেবে বিবেচ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন দেশ-সরকার-জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে সৌকর্যের সন্ধান জাতির উপলব্ধিতে প্রাচীয়মান করা আবশ্যক।
উল্লেখ্য মহান উদ্যোগকে প্রাণিত করার নিরবচ্ছিন্ন উদার প্রমিত দৃষ্টিভঙ্গিতে ২৬ মার্চ ১৯৭২ প্রথম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা আজ স্বাধীনতার প্রথম বর্ষপূর্তি উৎসব পালন করছি। এই মহান দিনে স্বাধীনতা অর্জনের পথে যে লক্ষ লক্ষ বীর শহীদ হয়েছেন তাঁদের জন্য গভীর বেদনাপ্লুত মন নিয়ে আমার শোকাতুর দেশবাসীর সাথে পরম করুণাময় আল্লাহ-তায়ালার দরবারে মাগফেরাত কামনা করছি। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবোজ্জ্বল ও অনন্য ভূমিকা পালনের জন্য আমি মুক্তিবাহিনীর সকল অঙ্গ দল তথা বাংলাদেশ রাইফেলস, পুলিশ, বেঙ্গল রেজিমেন্ট, সশস্ত্র বাহিনীর দেশপ্রেমিক সদস্যবৃন্দ, নির্ভীক যুবক, ছাত্র, কৃষক, মজুর, বুদ্ধিজীবী আর আমার সংগ্রামী জনসাধারণকে অভিনন্দন জানাই। তাঁদের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও একনিষ্ঠ আত্মদান অনাগত কালের, ভাবী বাঙালিদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আমাদের মুক্তি সংগ্রামের অভিজ্ঞতা বিশ্বব্যাপী ঔপনিবেশিকতা ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত মুক্তি পাগল জনতার চেতনাকে উদ্ভাসিত করবে।’
৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে কলকাতা বিগ্রেড ময়দানে বঙ্গবন্ধু সমার্থক প্রতিধ্বনিতে নিকটতম প্রতিবেশি ও অকৃত্রিম বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতকে নিত্যানন্দ চিত্তে স্মরণ করেন। এক কোটি দেশত্যাগী মানুষকে আশ্রয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অপরিমেয় সমর্থন-সহযোগিতার জন্য প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মহান নেতা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গ-ত্রিপুরা-মেঘালয়-আসামসহ ভারতের সমগ্র জনসাধারণের প্রতি অকুন্ঠ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেন। উল্লেখিত ভাষণে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা পেয়েছি, বড় রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি। এতো রক্ত কোন জাতি, কোন দেশে কোন দিন দেয় নাই, যা আমার বাংলাদেশের মানুষ দিয়েছে …….. আমার সহকর্মীরা আপনাদের দুয়ারে এসেছে, আপনাদের কাছে থেকে জানের সংগ্রাম করার জন্য। সংগ্রাম তারা করেছে। মানুষের মতো সংগ্রাম করেছে। আমি তাদের যাওয়ার সময় অস্ত্র দিতে পারি নাই। আমাকে যখন গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় আমি জানতাম না আমি মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পারব কিনা। কিন্তু আমার মানুষকে আমি বলে গিয়েছিলাম সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য, আমার কথা তারা রেখেছে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে সহানুভূতি প্রকাশের জন্য বঙ্গবন্ধু সোভিয়েত রাশিয়া-গ্রেট ব্রিটেনের জনসাধারণ ও তাদের সাংবাদিকদের প্রতি অফুরন্ত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমেরিকার সরকারকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই না। কৃতজ্ঞতা জানাতে পারব না। ভারত এগিয়ে এলো আমার জনসাধারণকে সাহায্য করার জন্য যখন আমার বাংলার গ্রামে গ্রামে হত্যাকাণ্ড চলছিল, যখন দুধের বাচ্চাদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছিলো আমেরিকার গভর্নমেন্ট কি জানতেন না সে খবর।…….. আমি আমেরিকার সরকারকে, আমি তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না। তবে এটুকু বলতে চাই আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারলাম না। আর আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। মুখে মুখে, মেহেরবাণী করে গণতন্ত্রের কথা না বলে গণতন্ত্র যাতে চলে সেদিকে একটু খেয়াল রাখুন। দুনিয়ায় সাম্রাজ্যবাদীর দিন চলে গেছে। ভারতবর্ষ আর বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদী খেলা চলবে না। এ বিশ্বাস আমার আছে।’
বঙ্গবন্ধুর আবেগঘন এই ভাষণে আদর্শিক ভাবধারার চেতনাসূচি প্রকাশ করে বলেন, “নীতির জন্য সংগ্রাম করেছিলাম। আজ আমার দেশ সার্বভৌম। বিশ্বাস করেন পশ্চিম পাকিস্তানের গরীব ভাইদের বিরুদ্ধে আমার কিছুই বলার নাই। আমি চাই তারা সুখে থাকুক। আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করি না। কিন্তু তারা যদি মনে করে থাকেন এখনো বিদেশে ঘুরে ঘুরে বলেন যে, বাংলাদেশ তাদের অংশ। তাহলে বাধ্য হয়ে আমাকে বলতে হবে তাদের পাগলাগারদ ছাড়া আর কোন জায়গায় স্থান নাই। আমরা ছিলাম সংখ্যায় বেশি। আমরা ঘোষণা করেছি আমার দেশ স্বাধীন। তুমি কোন জায়গার মাতবর হয়ে পড়লা, তুমি বলছো সার্বভৌম রাষ্ট্র নয়! বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে। তোমার ক্ষমতা নাই বাংলার স্বাধীনতা হরণ করার। বিনা অস্ত্রে যদি আমার বাংলার মানুষ আমার অনুপস্থিতিতে সংগ্রাম করে স্বাধীনতা নিয়ে আসতে পারে, আজ বাংলাদেশকে নিয়ে যদি ষড়যন্ত্র করতে চাও, আর কোন খেলা খেলতে চাও, মনো রেখো-সাত কোটি বাঙালির একটা প্রাণ থাকতে বাংলার মাটিতে ঢুকবার ক্ষমতা তোমাদের নাই।”
বিশ্বকবি রবীঠাকুরের ‘প্রান্তিক’ কাব্যগ্রন্থের পংক্তি উপস্থাপনে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস,/ শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস-/ বিদায় নেবার আগে তাই ডাক দিয়ে যাই/ দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে প্রস্তুত হইতেছে ঘরে ঘরে’। ‘আমার বাঙালিরা প্রস্তুত আছে। নাগিনীদের আমরা চিনি। ভয় নাই আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন, যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে দুনিয়া ঘুরে আপনার জন্য মুক্তি কামনা করেন। আর বাংলার স্বাধীনতা সমর্থন করেন ব্যাপার কি? আমি বলি ব্যাপারটা পরিষ্কার এবং সোজা, আপনি যদি বুঝতে চান, বুঝবার চান না বলে বুঝেন না। এটা হলো নীতির মিল। এটা হলো আদর্শের মিল। আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে, তিনি বিশ্বাস করেন গণতন্ত্রে। আমি বিশ্বাস করি সমাজতন্ত্রে, তিনি বিশ্বাস করেন সমাজতন্ত্রে। আমি বিশ্বাস করি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তিনি বিশ্বাস করেন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। আমি বিশ্বাস করি জাতীয়তাবাদ। তিনি বিশ্বাস করেন জাতীয়তাবাদ। এটা নীতির মিল, এটা আদর্শের মিল। সেই জন্যে হয়েছে আমাদের বন্ধুত্ব। ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। কারও ক্ষমতা নেই আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট করতে পারে।”
অতিসম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের যুগান্তকারী যুগসন্ধিক্ষণে জনগণ গভীর উৎকন্ঠার সাথে দেশকে অস্থিতিশীল করার অনাকাঙ্ক্ষিত-অনভিপ্রেত কিছু বিষয় অবলোকন করছে। জনশ্রুতিমতে দল ও সরকারে ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশকারী-বর্ণচোরা-ষড়যন্ত্রকারী-কুচক্রীমহল উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেশকে আবার অনগ্রসর সমাজে রূপান্তর করতে চাই। পাপাচার-কদাচার-মিথ্যাচার-প্রতারণা-দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে দেশ ধ্বংসের নতুন কদর্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লিপ্ত এসব অভিশপ্ত নরপশুদের উদ্দেশ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম’র ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার চরণ উচ্চারণে নিবন্ধের ইতি টানতে চাই – ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!/ ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখীর ঝড়।/ তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!/ আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল,/ সিন্ধুপারের হিংস-দ্বারে ধমক হেনে ভাঙ্ল আগল!/ মৃত্যু-গহন অন্ধ-কূপে মহাকালের চণ্ড-রূপে-ধূম্র-ধূপে/ বজ্র-শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ঙ্কর!/ ওরে ঐ হাসছে ভয়ঙ্কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!’
লেখক: শিক্ষাবিদ, সমাজ-অপরাধবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়