সোভিয়েত নাবিক রেডকিন শুধু বন্ধু নন, বাঙালির পরমাত্মীয়

শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানকালে মেয়র

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধকালীন হানাদার বাহিনী কর্তৃক কর্ণফুলীর বন্দর চ্যানেলে পুঁতে রাখা মাইন সরাতে গিয়ে ১৯৭৩ সালে আকস্মিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারানো তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নাবিক ইউরিজ রেডকিনের স্মৃতিস্তম্ভে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এইচ ই মিং আলেক্সান্ডার ম্যানটিটাক্সিসহ শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। নগরীর লালদীঘি পার্কে এ স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত গতকাল শনিবার বিকেলে টাইগারপাসস্থ নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন। এরপর লালদীঘি পার্কে যান তিনি।
এসময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন নাবিকের আত্ম বিসর্জনকে দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মৈত্রীর বন্ধনকে মর্যাদাপূর্ণ ও সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের কূটনৈতিক অবদান ও ভূমিকা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর বন্ধু রাষ্ট্রদের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ভেটো প্রদানের ঘটনাটি ইতিহাসের পাতায় একটি স্বাধীন জাতি সত্তার অভ্যূদয়ের অনন্য নজির হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, একাত্তরে হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে নব উদিত বাংলাদেশের অর্থনীতি পঙ্গু করার অসৎ উদ্দেশ্যে কর্ণফুলীর বন্দর চ্যানেলে শত শত মাইন পুঁতে রাখে। চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলকে সচল করার জন্য চ্যানেলটিকে মাইন মুক্ত করতে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের আহ্বানে সাড়া দেয় এবং তাদের নাবিকদের একটি দলের মাইন মুক্ত করার সফল অভিযানের ফলশ্রুতিতে চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল আশংক্ষা মুক্ত হয়ে গতিশীলতা ফিরে পায়। এজন্য রেডকিনের আত্মত্যাগ আমরা কখনো ভুলতে পারি না। তিনি শুধু বন্ধু নন, বাঙালির পরামাত্মীয়। রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেক্সন্ডার ম্যানটিটাক্সি বলেন, চট্টগ্রামে আমার প্রথম সফর। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। স্বাধীনতার পর খুব কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়ায় বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতিতে ভাটা পড়ে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই দেশটি এখন সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোড মডেল। এ জন্য বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমরা গর্বিত। রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে। এর কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তির অংশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি এতদিন পরও তাদের নাবিক রেডকিনকে স্মরণ রাখায় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রাশিয়ান অনারারি কনসাল স্থপতি আশিক ইমরান, কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে নৌকার মনোনয়ন পেলেন তোফাইল
পরবর্তী নিবন্ধঅর্জন তাইজুলের দুই উইকেট ৯৯তম খেলোয়াড় হিসেবে জয়ের অভিষেক