বাঁচা–মরার লড়াইয়ে গোটা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলে বেলজিয়াম। একের পর এক আক্রমণ করেও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে। ফলে রবার্তো মার্তিনেসের দল ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকেই। এর সঙ্গেই অবসান হল বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের। কারণ এই দলের অনেক ফুটবলারকেই আর সামনের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না। ক্রোয়েশিয়া ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে পৌঁছে গেছে নক আউট পর্বে। অন্যদিকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের নক আউটে খেলার সুযোগ পেয়েছে মরক্কো।
গতকাল বৃহস্পতিবার তারা ২–১ গোলে হারিয়ে দেয়
কানাডাকে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা নক আউট পর্বে খেলবে। গতকাল খেলার শুরু থেকে আক্রমণ–পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে ক্রোয়েশিয়া ও বেলজিয়াম। তবে গোলের দেখা না পেলে গোলশূন্য থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধেও কোন গোল না হলে গোলশূন্য ড্র হয় ম্যাচটি। আর এতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় বেলজিয়াম। আর গ্রুপ রানার আপ হয়ে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার জন্য জয় ছাড়া কোনও পথ খোলা ছিল না বেলজিয়ামের সামনে। অন্যদিকে ড্র করলেই চলতো ক্রোয়োশিয়ার। এমন সমীকরণকে মাথায় নিয়ে দুই দল একে অপরের বিপক্ষে খেলতে নামে কাতারের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে। তবে দিনটি বেলজিয়ামের ছিল না। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি দলটির সর্বোচ্চ গোলদাতা রোমেলু লুকাকু। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলও হলো গোলশূন্য ড্র। ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় বেলজিয়াম। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রোমেলু লুকাকুকে মাঠে নামায় রেড ডেভিলরা। ৬০ মিনিটে লুকাকুর ডান পায়ের শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও গোলবারে লেগে বাইরে চলে যায়। ৬৪ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় লুকাকু। এবার তার হেড চলে যায় গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে। ম্যাচের শেষ দিকে ৮৭ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন লুকাকু। এবারও তার শট দেখা পায়নি গোলের। ৯০ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন ইন্টার মিলানে ধারে খেলতে যাওয়া লুকাকু। থোরান হ্যাজার্ডের বাড়ানো বলে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়েও তা গোল মুখে ঢুকাতে পারেননি তিনি। মূলত লুকাকুর এতগুলো গোল মিসেই কপাল পুড়ে বেলজিয়ামের। খালি হাতেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় বেলজিয়ামকে। অন্যদিকে ড্র করে গ্রুপের রানার্স আপ হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। ১৯৮৬ সালের মেঙিকো বিশ্বকাপে শেষবারের মতো নকআউট স্টেজে খেলেছিল আফ্রিকার দেশ মরক্কো। মাঝে পেরিয়ে গেছে ৩৬ বছর। অবশেষে তিন যুগ পর পুনরায় নকআউট স্টেজে পা রাখলো মরক্কো। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ২–১ গোল জয় পাওয়ায় শেষ ষোলোতে জায়গা নিশ্চিত হয় তাদের। ‘এফ’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট স্টেজে গেছে মরক্কো। আর রানার্স আপ হয়ে নকআউট নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। ডু অর ডাই ম্যাচে মরক্কোর ফুটবলাররা বল পায়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে আসা কানাডাকে কাঁপিয়ে দেয়। প্রথমার্ধে ছয়টি আক্রমণ করে দুটি গোল আদায় করে নেয় মরক্কো। দলটির পক্ষে গোল করেছেন যথাক্রমে হাকিম জিয়েখ এবং ইউসুফ এন নেসেরি। হাকিম খেলার শুরুতে ৪ মিনিটের মাথায় গোল করে মরক্কোকে এগিয়ে দেন। ২৩তম মিনিটে মরক্কোর লিডকে ২–০ তে পরিণত করেন ইউসুফ। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে অবশ্য নিজ দলের খেলোয়াড়ের ভুলে একটি গোলও হজম করে বসে মরক্কো। ৪০ মিনিটে মরক্কোর জালে বল জড়িয়ে ফেলেন তাদেরই ফুটবলার নায়েফ আগার্ড। এবারের আসরে এটিই প্রথম আত্মঘাতি গোলের রেকর্ড।