সৈকতের স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ

কক্সবাজারে ওসি ও সাংবাদিকসহ আহত ১৫।। গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সেই ৫২ দোকান

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে সৈকত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা নিয়ে পুলিশ ও অবৈধ দখলদারদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) উচ্ছেদ দল অর্ধ শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতে ৫২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে যায়। এতে অবৈধ দখলদারদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও ফাঁকাগুলি ছুঁড়ে। আধ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে পুলিশের শক্ত অবস্থানের ফলে পিছু হটে অবৈধ দখলদাররা। সংঘর্ষে কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীরুল গিয়াস ও যমুনা টিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি নুরুল করিম রাসেলসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মাঝে বিএনপি ও সরকারদলীয় নেতারাও রয়েছেন। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর রাশেদ, কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মোক্তার ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর রাশেদ জানান, জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করলে অবৈধ দখলদার, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বহিরাগত কিছু লোক একজোট হয়ে স্থাপনাগুলোর সামনে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তবে তাদের হটিয়ে সন্ধ্যার পূর্বে অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। তিনি জানান, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দেয়। পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন একটি রিট দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাই কোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে দখলদারদের প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে। পরে মালামাল সরানোর জন্য স্থাপনা মালিকদের শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেধে দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় গ্লোবের ভ্যাকসিন
পরবর্তী নিবন্ধঢাকা ও নওগাঁয় উপনির্বাচনে নৌকার দুই প্রার্থী জয়ী