বাবা নুরুল মোস্তফার সঙ্গে স্থানীয় প্যারাগন ফিডমিলে শ্রমিকের কাজ করতেন শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছেলে আব্দুল মালেক (২৩)। তার একমাত্র বোন সুমাইয়া আক্তার (১৪) সরকারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার ছুটির দিন ভাইয়ের ফ্যাক্টরি বন্ধ। এ সুযোগে বড় ভাই মালেক ও পরিবারের সঙ্গে বাওয়াছড়া ঝর্ণায় বেড়াতে গিয়েছিল সুমাইয়া। বেড়ানো শেষে মীরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর রেললাইন পার হওয়ার সময় নিজের সেলফি তুলছিলেন মালেক। পেছনে ট্রেন খুব কাছে চলে এলে ভাইকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয় বোন। দুজনই ঘটনাস্থলেই কাটা পড়ে নির্মমভাবে নিহত হয়।
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর বাওয়াছড়া সড়কের রেল গেটে এ ঘটনা ঘটে। তাদের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ওয়াহেদপুর এলাকায় বসবাস করে আসছিল তারা।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক ফিরোজ জানান, শুক্রবার বিকেলে মোস্তফার স্ত্রী ছেলে মেয়েরা ওয়াহেদপুর বাওয়াছড়া লেকে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে রেললাইনে ছবি তুলছিল ভাই মালেক। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী ট্রেন আসছে দেখে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে বোন সুমাইয়াও কাটা পড়ে প্রাণ হারাল। তিন সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানকে হারিয়ে নুরুল মোস্তফা শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। তার আরেক ছেলেও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। চট্টগ্রাম জিআরপি (রেলওয়ে) পুলিশের ওসি কামরুল হাসান বলেন, মীরসরাইয়ের ওয়াহেদপুর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে দুইজন মারা যাওয়ার পর আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি।