সেমিফাইনালে ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের বিদায়

পেনাল্টি মিস করলেন হ্যারি কেইন

ক্রীড়া প্রতিবেদন | রবিবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

 

পেনাল্টি মিসের খেসারত দিল ইংল্যান্ড। থামাতে পারল না চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে। অধিনায়ক হ্যারি কেইনের পেনাল্টি মিসের খেসারত দিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হলো তাদের। গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল এবং ইউরো কাপের ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া ইংলিশরা এবারেও পারল না বিশ্বকাপের শেষের দিকে যেতে। দুই ইউরোপিয়ান সুপার পাওয়ারের লড়াইয়ে জয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের। গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ২১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। আর এই জয়ের ফলে ফরাসিরা পৌঁছে গেল সেমিফাইনালে। যেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে এবারের বিশ্বকাপের সবচাইতে বড় চমক মরক্কো। একে একে তারকা খসার মিছিলে নেইমার, রোনালদোদের পর এবার যোগ হলো হ্যারি কেইন। ৩২ দল থেকে বাদ পড়তে পড়তে এখন চার দলের বিশ্বকাপে পরিণত হয়েছে কাতার আসর। আর চারটি ম্যাচ পর নিশ্চিত হয়ে যাবে কাদের ঘরে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ ট্রফি। আর সে লড়াইয়ে টানা দ্বিতীয় বার বিশ্বকাপ জয়ের লড়াইয়ে বেশ ভালভাবেই আছে ফ্রান্স। আর বিদায় নিতে হলো ইংলিশদের শেষ আট থেকে।

দুই ইউরোপিয়ান জায়ান্টের লড়াই শুরু হয় দুর্দান্ত গতিতে। শুরু থেকেই ম্যাচে গতির ঝড়। বল একবার মাঠের এই প্রান্তেতো আবার অপর প্রান্তে। তবে এসব ম্যাচে সুযোগ আসে কম। যখনই আসে তখনই তা কাজে লাগাতে হয়। যেমনটি লাগিয়েছে ফ্রান্স। ১৭ মিনিটে এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা। একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে একাধিক খেলোয়াড়ের পা ঘুরে বল যায় গ্রিজম্যানের পায়ে। তিনি বাড়ান তিকোমেনির দিকে। দুর্দান্ত এক শটে তিনি বল জালে

পাঠান। এগিয়ে যায় ফ্রান্স। দুই মিনিট পর সমতা ফেরাতে পারতো ইংল্যান্ড। কি শ এর শট সরাসরি চলে যায় ফ্রান্স গোল রক্ষকের হাতে। ২৮ মিনিটে ডি বঙের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন হ্যারি কেইন। এবার তাকে বঞ্চিত করলেন ফরাসি গোল রক্ষক। দারুন দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রায় দলকে রক্ষা করেন তিনি। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে গোল করতে পারেনি আর কেউই। ফলে ফ্রান্সের এগিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। ৪৭ মিনিটে সমতা ফেরাতে পারতো তারা। কিন্তু বেলিংহ্যামের জোরালো শট রুখে দেন ফরাসি গোল রক্ষক। অবশ্য তার চার মিনিট পর সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড। নিজেদের ডি বঙে সাকাকে ফাউল করেন ফ্রান্সের গোল দাতা তুকুমেনি। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে হ্যারি কেইন গোল করে সমতা ফেরান। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে জমে উঠা ম্যাচে ৫৪ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ফ্রান্স। কিন্তু রেবিয়টের শট ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোল রক্ষক। ৫৯ মিনিটে এবার সুযোগ ইংল্যান্ডের সামনে। এবার একাধিক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে সাকার শট ফিরিয়ে দেন ফরাসি গোল রক্ষক। এরপর বলতে গেলে ফ্রান্সকে চেপে ধরে ইংল্যান্ড। ৬৯ মিনিটে কেইনের ফ্রিকিক থেকে মেগুইয়ার হেড চলে যায় সাইডবার ঘেষে। ৭১ মিনিটে আরো একটি সুযোগ হারায় ইংল্যান্ড। এবার শ এর মাইনাস থেকে সাকা যে শট নেন তা চলে যায় সাইডবার ঘেষে। ৭৭ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ফ্রান্স। দেম্বেলের ক্রসে জিরুদের শট রুখে দেন ইংলিশ গোল রক্ষক। তার পরের মিনিট কর্নার কিক থেকে ফিরে আসা বলে আবার দেম্বেলের ক্রস। এবার জিরুদের নিখুঁত হেড আর রুখতে পারেনি ইংলিশ গোল রক্ষক। আবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স। তবে চার মিনিট পর নিজেদের ডি বঙে মাউন্টকে ফাউল করেন ফরাসি ডিফেন্ডার হার্নানাদেজ। ভিআরের সহায়তায় পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু এবার ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন বাইরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন তিনি। ফলে সমতা ফেরানো হয়নি ইংল্যান্ডের। ইনজুরি টাইমে ফ্রান্সের ডি বঙের সামনে ফ্রি কিক পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্ত সে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি ইংল্যান্ড। আর তাতেই চোখের জলে বুক ভাসিয়ে বিদায় নিতে হলো ইংলিশদের। আর ফরাসিরা মাতে শেষ চারে যাওয়ার আনন্দে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি, নিহত ২
পরবর্তী নিবন্ধসভাপতি-সা. সম্পাদক পদে বহাল থাকছেন মোছলেম-মফিজ