সেমিফাইনালের পথে আফগানিস্তানও

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

এবারের আগে বিশ্বকাপে কখনোই কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি আফগানিস্তান। আর এবারেও বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের কাছে হেরে। কিন্তু এরপর থেকে একের পর এক বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে দলটি। বাংলাদেশের কাছে হারের পর তিন সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে সবচাইতে আলোচিত এক দলে পরিণত হয় আফগানরা। তিন ম্যাচে জিতে নিজেদের সেমিফাইনালের পথে রাখে রশিদনবীরা। আর গতকাল চতুর্থ জয় তুলে নিয়ে এখন সেমিফাইনালের পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল আফগানিস্তান। গতকাল ভারতের লখনৌতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আফগানিস্তান ৭ উইকেটে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। এটি বিশ্বকাপে তাদের চতুর্থ জয়। এই জয়ের ফলে ৭ ম্যাচের চারটিতে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের পথে বেশ ভালভাবেই শামিল হলো আফগানিস্তান। পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে চলে এসেছে আফগানিস্তান। তাদের পরের দুই ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচের একটিতে জিততে পারলেও সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা থাকবে আফগানিস্তানের। এবারের বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দেওয়া আফগানিস্তানের শেষটা কোথায় গিয়ে থামে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

আফগানিস্তান মূলত তিন স্পিনার রশিদ, নবী এবং মুজিব নির্ভর দল। এই তিন জনই প্রতিপক্ষের জন্য যথেষ্ট। এই তিন জনের সাথে যোগ দিয়েছেন আরেক স্পিনার নুর আহমেদ। এই চার স্পিনারের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয় নেদারল্যান্ডস। যদিও রশিদ খান উইকেট পাননি। তবে আফগানদের স্পিনের সামনে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি ডাচ ব্যাটাররা। নেদারল্যান্ডস ১৭৯ রানের যে লক্ষ্য দাঁড় করিয়েছিল তা একেবারে হেসে খেলে পেরিয়ে যায় রহমত শাহ, শহীদিরা। এই দুজনের হাফ সেঞ্চুরির উপর ভর করে ১১১ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান। সে সাথে নিজেদের রান রেটও বাড়িয়ে নেয়।

গতকাল টসে জিতে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডস প্রথম ওভারেই ওপেনার ওয়েসলি বারেসির উইকেট হারায়। ১ রানে আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন বারেসি। এরপর ম্যাঙ ও’ডাউড এবং কলিন অ্যাকারম্যান সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে ৫০ রানের জুটি গড়েন। ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। দলীয় ৭২ রানের মাথায় ৪২ রান করে ফিরেন ও’ডাউড। এরপর ২৯ রান করে অ্যাকারম্যানও পথ ধরেন ড্রেসিং রুমের। দুজনই রান আউটের শিকার হন। এ দুজন ছাড়াও আরো দুজন রান আউটের ফাঁদে পড়েন। ৪০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দারুন চাপে তখন নেদারল্যান্ডস। এরপর দলকে টানেন সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট। দুইবার জীবন পেয়ে সেটাকে কাজে লাগান এই ব্যাটার। আর তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস। তবে দলটির লোয়ার মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা ব্যাট হাতে তেমন ভূমিকা রাখতে না পারায় ২০০ রান করাও সম্ভব হয়নি নেদারল্যান্ডসের। ১৭৯ রানে থামে ডাচরা।

আফগানিস্তানের পক্ষে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। নুর আহমেদ নিয়েছেন ২ উইকেট।

জবাবে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তান ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারায়। ১০ রান করা রহমানুল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন ভ্যান ভিক। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানও বেশি দূর এগুতে পারেননি। তিনি ফিরেছেন ২০ রান করে। এরপর দলের হাল ধরেন রহমত শাহ এবং অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। এ দুজনের ৭৪ রানের জুটি আফগানিস্তানকে জয়ের কিনারায় নিয়ে যায়। ৫৪ বলে ৫২ রান করে সাকিব জুলফিকারের বলে ফিরেন রহমত শাহ। এরপর আজমত উল্লাহ ওমরজাইকে নিয়ে বাকি কাজটা সেরে আসেন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। ৩১.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করে ফিরেন দুজন। অধিনায়ক শহীদি ৬৪ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আর আজমত উল্লাহ ওমরজাই অপরাজিত ছিলেন ২৮ বলে ৩১ রান করে। আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধনারী সাংবাদিকদের মেলবন্ধনে, চট্টগ্রাম