বাংলাদেশের বিপক্ষে সুপার এইটের ম্যাচ শেষ করে হোটেলে পৌঁছতেই বেজে গেছে রাত ৩টা। সকাল ৮টায় হোটেল ছেড়ে আবার বিমানবন্দরে ছুটতে হয়েছে আফগানিস্তান দলকে। ফ্লাইট চার ঘণ্টা বিলম্বের পর সেন্ট ভিনসেন্ট থেকে ত্রিনিদাদে পৌঁছেছেন তারা। এরপর অনুশীলন করা তো বহুদূর, বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগই পায়নি। পরদিনই সেমিফাইনাল। টসের সময় অধিনায়ক রাশিদ খান তো বলেই ফেললেন ঘুমাতেই পারেননি তারা। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার পর সেই ক্লান্তির কথা বললেন আফগানিস্তান কোচ জোনাথন ট্রটও। যদিও এটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাননি তিনি। তবে উইকেট নিয়ে আপত্তির ককথা লুকালেন না ট্রট। তার মতে, সেমিফাইনালের মতো বড় ম্যাচ এই ধরনের উইকেটে হওয়া উচিত নয়। সেমিফাইনালে আফগানিস্তান ১১.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ৫৬ রানেই। এই সংস্করণে এত কম রানে ও এত কম ওভারে আগে কখনোই অলআউট হয়নি তারা। সংবাদ সম্মেলনে ট্রটের কাছে প্রশ্ন ছুটে যায় উইকেট নিয়ে। টুর্নামেন্টজুড়েই এবার প্রবল সমালোচনার খোরাক জুগিয়েছে উইকেটে। প্রথম সেমিফাইনালের পর আফগান কোচের কণ্ঠেও সেই অসন্তুষ্টি। আইসিসির শাস্তির ভয় ভাবনায় রেখেই নিজের মতামত দিলেন তিনি।
তিনি বলেন আমি নিজেকে বিপদে ফেলতে চাই না। ‘আঙুর ফল টক’ এই ধরনের কোনো অনুভুতিও ছড়িয়ে দিতে চাই না। তবে ব্যাপারটি হলো, এই ধরনের পিচে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচ কাম্য নয়। লড়াইটা ন্যায্য হওয়া উচিত। এমন বলছি না যে, পিচে কোনো স্পিন ধরবে না বা সিম মুভমেন্ট থাকবে না। তবে ফরোয়ার্ড খেলতে গেলে ব্যাটসম্যানরা ভয়ে থাকবে যে, বল মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যেতে পারে। এমন কিছুও হওয়া উচিত নয়। পায়ের কাজ নিয়ে, বা বলের লাইনে খেলার চেষ্টা কিংবা নিজের স্কিল দেখানোর চেষ্টায় সবার ভরসা থাকা উচিত। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্যাপারটিই হলো আগ্রাসী হওয়ার। রান করার ও উইকেট নেওয়ার। এখানে টিকে থাকতেই ভোগান্তি হওয়ার কথা নয়।
সেমিফাইনালে এমন পরাজয়ের পর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে আফগান কোচের। হতাশা আছে গোটা দলেই। তবে ইতিহাস গড়ার গর্বও আছে তাদের। ট্রট বললেন, এবারের শিক্ষা তারা কাজে লাগাবেন সামনে। এই ধরনের ম্যাচ হারাটা সবসময়ই কষ্টের। কষ্ট পাওয়াই উচিত। কারণ ক্রিকেটাররা, কোচিং স্টাফ ম্যানেজমেন্ট, অফিসিয়ালরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করে। কষ্ট তাই আছেই। আমরা উজ্জীবিত হয়েই মাঠে এসেছিলাম। শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে লড়তে তৈরি ছিলাম। কিন্তু কাজটা আমরা করতে পারিনি। তবে ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত। এই ম্যাচের পারফরম্যান্স তাদের গোটা টুর্নামেন্টের পরিচায়ক নয়। তবে এটা আমাদেরকে এটুকু বলে দিচ্ছে যে, কোথায় কাজ করতে হবে এবং কোথায় আরও ভালো হতে হবে।