আগামী সেপ্টেম্বরে দেশের ৫ কোটি শিশু–কিশোরকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে, যার নিবন্ধন এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। নয় মাস থেকে শুরু করে ১৬ বছরের কম (১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন) বয়সীদের বিনামূল্যে এ টিকা দেওয়া হবে।
সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ব্যবস্থাপক আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান গতকাল শনিবার বলেন, টাইফয়েডের এই টিকা দেওয়া হবে দুই ধাপে। প্রথম ধাপে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ কার্যদিবসে বিদ্যালয়ভিত্তিক ক্যাম্পে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে যারা বাদ পড়বেন, তারা দ্বিতীয় ধাপের আট দিনে ইপিআইয়ের কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে পারবেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, এক ডোজের ইনজেকশনে দেওয়া হবে এই টিকা, যা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এই টিকা সরবরাহ করেছে। টিকাগুলো কেনা হয়েছে ভারত থেকে। এরইমধ্যে সব টিকা চলে এসেছে। এ টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা, কিংবা টিকা দেওয়ার আগে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ হবে কিনা, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিকাগুলো কেনে গ্যাভি, তাদের সুবিধামত দেশ থেকে কিনে দেয়। টিকাগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী তৈরি করা। এটা শতভাগ পরীক্ষিত টিকা। আমাদের উপমহাদেশের নেপাল, পাকিস্তান ছাড়া আরও কয়েকটি দেশে এ টিকাদান শুরু হয়েছে।
সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ টাইফয়েড আক্রান্ত হন। এই ব্যাকটেরিয়া দূষিত খাবার বা পানি থেকে ছড়ায়।
নিবন্ধন যেভাবে : টাইফয়েডের টিকাদানের জন্য ১ অগাস্ট থেকে অনলাইন (vexepi.gov.bd/registration/tcv) নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ। এরপর নারী না পুরুষ সেই ঘরটি পূরণ করতে হবে। একটি ক্যাপচা কোড পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীর সব তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে পরের ধাপে যাওয়া যাবে। পরের অংশে গিয়ে আবেদনকারী মা–বাবার মোবাইল নম্বর, ই–মেইল, পাসপোর্ট নম্বর, বর্তমান ঠিকানার ঘর পূরণ করে ‘সাবমিট’ করতে হবে। ‘সাবমিট’ করার পর মোবাইল ফোনে আসা একটি ‘ওটিপি’ দেওয়ার মাধ্যমে নিবন্ধনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে। দ্বিতীয় ধাপে টাইফয়েড অথবা মেনিনজাইটিসের মধ্য থেকে একটি বাছাই করতে হবে। টাইফয়েড অংশে ক্লিক করলে দুটি অপশন আসবে– শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৯ম শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভুত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু। এখান থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপশনে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, পুরো ঠিকানা, কোন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তা পূরণ করতে হবে। এরপর সাবমিট করলে টিকাদান কেন্দ্রের তথ্য আসবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভুত অপশনে গিয়ে টিকাদান কেন্দ্র বাছাইয়ের পর ‘সাবমিট’ করতে হবে। এরপর ভ্যাকসিন কার্ড আসবে। সেখানে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এই কার্ড নিয়ে নির্ধারিত দিনে টিকাদান কেন্দ্রে যেতে হবে। টিকা দেওয়ার পর অনলাইনেই পাওয়া যাবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট। জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলেও বাবা–মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করা যাবে।