চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, আমি মনে করি সরকারের এখন ভাবার সময় এসেছে যে, সেন্সরের নামে শিল্পীদের গলা চেপে ধরা আদৌ তাকে রক্ষা করতে পারছে কিনা? কারণ সে যেটার ভয়ে আছে, সেটা আপনি ফেসবুকে পাবেন, ইউটিউবে গেলে পাবেন। সেন্সর বোর্ড এখন অকেজো জিনিসে পরিণত হয়েছে। যেটা এখন শুধুমাত্র যন্ত্রণা দিতে পারে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে আয়োজিত মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান ফিল্ম সোসাইটি তিন দিনব্যাপী সিনেমা উৎসব ‘একান্নবর্তী’র আয়োজন করেছে। উৎসবে শেষ দিনে মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী, মেজবাউর রহমান সুমন ও আশফাক নিপুন। অনুষ্ঠানে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ইরানে একটা নির্দিষ্ট আইন আছে। আমাদের দেশে সেটা নেই। তাই আমরা জানি না আমাদের সীমা কতটুকু। আমরা জানি না কোন কথাটা বললে আটকে দেবে। আর কোন কথাটা বললে আটকে দেবে না। সেন্সর আইন করা হয়েছিল, কারণ কেউ যেন সরকারের সমালোচনায় এমন কিছু না বলে, যেটাতে সরকার ঝামেলায় পড়ে। এখন সরকারের সমালোচনা করার জন্য কার এত ঠেকা পড়েছে কষ্ট করে সিনেমা বানাবে?
তিনি আরও বলেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তির একটাই উপায় দেশে যখন আইনের শাসন থাকবে, দেশে যখন মানুষের সত্যিকারের কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিচার থাকবে, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, তখন শিল্পীও তার গল্প বলার স্বাধীনতা পাবে। সমাজের অন্যান্য জায়গায় স্বাধীনতা নাই কিন্তু সিনেমায় স্বাধীনতা থাকবে এটা একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে যদি আমি প্রত্যাশা করি তাহলে আমি খুবই রোমান্টিক। এটার কোনো মানে নাই।
ফারুকী বলেন, আমাদের শিল্পীরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না। দায়িত্ব পালন না করলেও হতো, কিন্তু কখনো কখনো ভুল দায়িত্ব পালন করছেন। এটা যে কতটা বিপজ্জনক দিক সেটা আমাদের সর্বনাশ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা টের পাব। এর মাধ্যমে আমরা শুধু যে আমাদের সর্বনাশ করেছি সেটা না। বরং সরকারকেও ভুল পথে যেতে উৎসাহিত করেছি। আমাদের দেশের সাহিত্যিকরা, শিল্পীরা, থিয়েটার কর্মীরা যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, তাহলে বাংলাদেশ আরও সুন্দর হতো, সরকার তখন সচেতন হতো।