দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরির্তন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অফিস আদেশটি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের হাতে পৌঁছেছে বলে গতকাল বুধবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান। তিনি বলেন, গঠিত কমিটির প্রধান কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিলে আদেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। খবর বিডিনিউজের।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরির্তন মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক থাকবেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সদস্য সচিব থাকবেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক। সদস্য থাকবেন– বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, কঙবাজারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কঙবাজারের একজন প্রতিনিধি, ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি।
কমিটির কর্মপরিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অ্যাপস থেকে পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করা, পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পণ্য (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী) পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া পর্যটকরা কোন হোটেলে অবস্থান করবেন তা লিখে রাখতে হবে। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্ট মার্টিনের এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কঙবাজার জেলা কার্যালয় সার্বিক যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। এবং কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো–অপ্ট করতে পারবে।
২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সভায় সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি–নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপ–সচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। যে পরিপত্রে পাঁচটি বিষয় বলা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিনে নৌযান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না। এমন সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’বলে মনে করছেন দ্বীপবাসী। মঙ্গলবার সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা কাফনের কাপড় পড়ে কঙবাজারে এসে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল–মোটেল, রেস্তোরাঁ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা–কর্মচারী ও কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।