কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার পথে মিয়ানমার থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রলারে ফের গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে সাতটি গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদীর বদরমোকাম মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার রাতে সেন্টমার্টিন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের স্থগিত কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় একই ট্রলারকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করা হয়েছিল।
সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, গতকাল দুপুরে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া খাল থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রীবাহী এসবি রাফিয়া ৪ জন মাঝিমাল্লাসহ সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে ট্রলারটি টেকনাফ–সেন্টমার্টিন নৌপথের বদরমোকাম এলাকায় পৌঁছলে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে ট্রলারের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। তখন ট্রলারে থাকা অপর মাঝিমাল্লারা শুয়ে পড়েন। এ সময় এসবি রাফিয়াকে লক্ষ্য করে ২০ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে মাঝি মোহাম্মদ বেলাল ট্রলারটি ঘুরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে নিয়ে এসে নোঙর করেন।
ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ বেলাল জানান, বুধবার রাতে সেন্টমার্টিন থেকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে স্থগিত কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় একই ট্রলারকে লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলি করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। গতকাল পুনরায় ওই ট্রলারে করে পণ্য নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় মিয়ানমারের উপকূল থেকে ট্রলারকে লক্ষ্য করে ২০–৩০ রাউন্ড গুলি করা হয়। পরে ট্রলারটিকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে এনে নোঙর করা হয়েছে।
তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপার থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি নাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে বলা যাচ্ছে না।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। এসব মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর একমাত্র জোগান টেকনাফ থেকে আসছে। গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে এই নৌপথে চলাচলকারী সার্ভিস ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ নৌপথে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
টেকনাফের ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গুলির বিষয়টি শুনেছি। সার্ভিস ট্রলারকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির কাছে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হবে।