সেনা সহায়তায় ১৯ বছর পর দেশে ফিরলেন ময়নুল

| সোমবার , ৩ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশে ফিরেছেন সুদানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করা বাংলাদেশি নাগরিক মো. ময়নুল হক। গতকাল রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। খবর বাংলানিউজের।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেই’ (UNISFA)-তে বাংলাদেশের একটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন, ব্যানব্যাট৩ এর একটি টহলদল আবেই বাজার এলাকায় হঠাৎ ময়নুল হকের সন্ধান পায়। প্রায় ১৯ বছর আগে ঠিকাদারির কাজে সুদানের রাজধানী খার্তুমে পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু হঠাৎ শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ তার জীবনকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দেয়। বহুদিন অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকার পর প্রাণ বাঁচাতে তিনি পলায়ন করে চলে আসেন আবেই অঞ্চলে। দুর্ভাগ্যক্রমে এ সময় তিনি হারান পাসপোর্টসহ সমস্ত বৈধ নথিপত্র, যার ফলে দেশে ফেরা তার জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাক্ষাৎ পেয়ে তিনি দেশে ফিরে আসার প্রবল আকুতির কথা জানান।

এ প্রেক্ষিতে আবেইতে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং তার দেশে ফেরার আবেদন সেনাসদরে পাঠান। পরবর্তীতে আবেদনটি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে গত ১৫ আগস্ট ইথিওপিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস কর্তৃক ময়নুল হককে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য ‘ট্রাভেল পারমিট’ ইস্যু করা হয়।

এছাড়াও তার বর্তমান আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে দূতাবাস বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের বিমান ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আবেই থেকে বিমানযোগে জুবা, সাউথ সুদানে আগমন করেন ময়নুল হক। পরে জুবা, সাউথ সুদান থেকে তিনি ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানযোগে রোববার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সুদানের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন এবং পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে ময়নুল হক খুবই আনন্দিত ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি তার প্রত্যাবর্তনের জন্য সহায়তা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় আটকে পড়া একজন বাংলাদেশি নাগরিকের দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো মানিবক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা আনন্দিত ও গর্বিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে পাহাড় কেটে বিক্রি করা হচ্ছে মাটি
পরবর্তী নিবন্ধএকাদশের নতুন শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন শুরু