কক্সবাজারে আলোচিত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা এবং সরাসরি গলায় ছুরি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিতকারী নাছির উদ্দিন ওরফে ডাকাত নাছির (৩৮) কে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫ টায় চকরিয়ার মধ্যম কাহারিয়া ঘোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত নাছির এবং হত্যাকাণ্ডে তার অপর সহযোগী এনাম ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর যৌথবাহিনীর অভিযানকালে চৌকস সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ধাওয়া করে ডাকাত দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নাছির উদ্দিনকে সশস্ত্র অবস্থায় ধরে ফেলে। নাছিরকে ছাড়িয়ে নিতে ২/৩ জন ডাকাত মিলে লে. তানজিমের উপর হামলা করলেও তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে তা প্রতিরোধ করেন এবং ডাকাত নাছিরকে জাপটে ধরে রাখেন।
এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে তার উপর হামলা করে। এ সময় ডাকাত নাছির সুযোগ বুঝে হাতে থাকা ছুরি লে. তানজিমের গলায় ঢুকিয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর খুনী নাছির উদ্দিন ও এনামুল হক সময়-সুযোগ বুঝে সমুদ্র পথে বিদেশ চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত আভিযানিক দল রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
এ প্রসঙ্গে র্যাব-১৫ এর বান্দরবান ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চকরিয়া কাহারিয়া ঘোনা এলাকায় নাছিরের ফুপু শাশুড়ির বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় দেখা যায় প্রযুক্তি সচেতন নাছির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য নজরদারি এড়াতে মোবাইল ফোন থেকে ব্যাটারি বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন। এমনকি ধরা পড়ার পর ভুয়া নাম পরিচয় দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেনা কর্মকর্তা লে. তানজিমকে পরিকল্পিতভাবে এবং অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় খুনের কথা স্বীকার করে নাছির। উদ্দেশ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনে ভয় ধরিয়ে দিয়ে চলমান অভিযানের গতি শ্লথ করে দেওয়া।