বিশ বছর আগেও শিক্ষক এবং বড়জনদের প্রতি গভীর সম্মান শ্রদ্ধা ছিল। ছোটরা কথা শুনতো, মান্য করতো। মা বাবার কথার বাইরে কোন কাজে অনুমতি ছাড়া সিদ্ধান্ত নিত না। আর এখন ডিজিটাল যুগে সব কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ তার উল্টোটাই চোখে পরে। সেই যুগ ছিল সনাতনী (ম্যানুয়াল) যুগ, আর এখন ডিজিটাল বা স্মার্ট যুগ। সনাতনী যুগের ভুল হওয়া প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র যখন তখন নিজে ইচ্ছামত করিয়ে নেওয়া যেত। এখন সেই সুযোগ আর নেই। কম্পিউটার আর মোবাইলের বহু ধরনের নিয়ম কানুন বা পদ্ধতি আছে সেকালের মানুষের মাথায় ঢুকে না। লেখা পড়ার ধরনও বদলে গেছে। বয়স্করা শত শিখলেও মুহূর্তে ভুলে যায়, ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই ৬০ উর্ধ্বে বয়সের মানুষের প্রতিনিয়ত পথ চলা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। কারো কাছ থেকে বার বার জানতে চাইলে বিরক্ত বোধ করে অসহায় বৃদ্ধরা মনে কষ্ট পায়, অপমান বোধ করে। শিক্ষা অর্জন বা পাস করা এক জিনিস, আর জ্ঞান অর্জন করা অন্য জিনিস। যাদের জ্ঞান নেই তাদের শিক্ষার কোন মূল্য নই। েস্কুল কলেজে গেলে পাস করে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। কিন্তু জ্ঞানী হওয়া যায় না। জ্ঞানী হতে হলে আচার আচরণ ব্যবহার ভদ্রতা নম্রতা এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয়। ব্যবহারিক আচরণগুলো বাজার থেকে অর্থ দিয়ে ক্রয় করা যায় না। নিজের কাছে, বিবেকের মধ্যে তা সংরক্ষিত আছে। সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই একজন শিক্ষিত বলে দাবী করতে পারে। সেই সাথে বড়দের প্রতি সম্মান পারিবারিক সমপ্রীতি সৌহার্দ্য রক্ষা করা এবং সমাজিকতায় ভূমিকা রাখা দায়িত্বে পড়ে। বাহ্যিক চাকচিক্য দেখিয়ে আত্মঅহংকারে ডুবে থাকলে বা নিজেকে সব কিছু থেকে সরিয়ে রাখলে তাকে কখনো সুশিক্ষিত বলা যায় না। ইদানিং প্রায়ই পত্র পত্রিকাতে পড়ি, সভায় আলোচনায় বা আড্ডায় বলতে শুনি আজকালকার ছেলে মেয়েদের নিয়ে সমালোচনা করতে। নিজ নিজ ধর্মের প্রতি আগ্রহ নেই, চর্চ্চা নেই, চলাফেরার কোনো নিয়ম নেই। কোনো শিক্ষণীয় গঠনমূলক অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি দেখা যায় না। শুধু মোবাইল আর আড্ডা নিয়ে নিজেদের জীবনে অতিমূল্যবান সময়টুকু নিজেরাই হারিয়ে ফেলছে। এইটুকু বুঝার জ্ঞান তাদের নেই। চলে যাওয়া সময়ের মূল্য তখনই বুঝবে যখন সময় আর ফিরে আসবে না। তাই সময় থাকতে সময়ের মূল্য দেওয়া একজন বুদ্ধিমানের কাজ। উপদেশ কখন উপহাস নয়, অজ্ঞতায় সর্বনাশ ডেকে আনে। অভিজ্ঞতা থেকে উপদেশ দেওয়া হয়।












