সেই ৪ লাখ ঘনফুট বালু বনের ভেতরই ছিটিয়ে দিচ্ছে বনবিভাগ

আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন শুরু

চকরিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১০ মে, ২০২৪ at ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সংরক্ষিত বনের ভেতর থেকে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কর্তৃক শ্যালোমেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলিত সেই ৪ লাখ ঘনফুট বালু অবশেষে আদালতের নির্দেশে বনের ভেতরই ছড়িয়েছিটিয়ে দেওয়া শুরু করেছে বনবিভাগ। এতে বারবাকিয়া রেঞ্জের টৈটং বনবিটের মধুখালী এলাকায় সংরক্ষিত বনের বালু বনের ভেতরেই থাকছে। একইসাথে আদালতের নির্দেশে এই বালু আর কেউ যাতে নিতে না পারে সেখানে হরেক প্রজাতির বৃক্ষরোপণও করা হবে বলে।

বনবিভাগ জানায়, গত বুধবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে জব্দকৃত চার লাখ ঘনফুট বালু নিচু ও সমান্তরাল ভূমিতে ছিটিয়ে দেওয়ার কার্যক্রম। চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের সময় উপস্থিত থাকছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা এবং ৬৫ জন বনকর্মী। একইসাথে এই কাজে শতাধিক শ্রমিকও কাজ করছেন।

বনবিভাগ জানায়, ২০২৩ সালের মে মাসে বিপুল পরিমাণ এই বালু বনবিভাগ জব্দ করে বিভাগীয় মামলা মূলে। কিন্তু বনবিভাগের জব্দের প্রায় একবছরের মাথায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সেই বালু দ্বিতীয়বার জব্দ করেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এরপর বনবিভাগের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালতের বিচারক সেই বালু বনের ভেতরই বিছিয়ে দিয়ে সেখানে বৃক্ষরাজি সৃজনের নির্দেশ দেন।

বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক আজাদীকে বলেন, ‘২০২৩ সালের মে মাসে বিভাগীয় মামলা মূলে কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪ লাখ ঘনফুট বালু জব্দ করে বনবিভাগ। জব্দকৃত সেই বালু গত ২৭ মার্চ পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম সংরক্ষিত বনের ভেতর গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার জব্দ করেন। এবং নিলামে তোলার প্রক্রিয়াও শুরু করেন ইউএনও। যা বনবিভাগের সঙ্গে রীতিমতো দ্বন্দ্বে জড়ানোর শামিল ছিল। এসব বিষয় বনবিভাগ আদালতের নজরে আনলে আদালত জব্দকৃত বালু বনের নিচু স্থানে এবং সমান্তরাল ভূমিতে মিশিয়ে দিয়ে সেখানে বৃক্ষরাজি সৃজনের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনার বাস্তবায়নে গত দুইদিন ধরে বনবিভাগ কাজ করছে।’

সহকারী বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ পেয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে বনের ভেতরকার বালু বনের ভেতরই ছড়িয়েছিটিয়ে এবং বিছিয়ে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে দুটি হুইল লোডার ও শতাধিক শ্রমিক। তারা গত বুধবার ভোর থেকে আদালতের আদেশ প্রতিপালনের কাজ শুরু করেছেন। বালু বিছানোর কাজ শেষ হলে সেখানে বৃক্ষরাজি সৃজনের কাজও শুরু করা হবে। কাজ শেষ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, পাইলটের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল