টেকনাফে তিন দিন ধরে দু’টি হাতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে বন বিভাগ। বনে ঢুকিয়ে দেওয়া ও প্যারা বনে চলে আসা নিয়ে গোলকধাঁধায় পড়েছে সংশ্লিষ্টরা। প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় এমন অবস্থায় পড়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ফলে হাতি দু’টি উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
গত শনিবার ২৬ জুন টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া সংলগ্ন এলাকায় আসা বুনো হাতির জোড় এখন শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চরে অবস্থান করছে।
কয়েক দফা চেষ্টা চালাানো হলেও তাদের এখনও বনাঞ্চলে প্রবেশ করানো সম্ভব হয়নি। বরং এখন বাংলাদেশের স্থলভাগের সর্বদক্ষিণ ঠিকানা নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত ঘোলার চরে গিয়ে ঠেকেছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমেদ টেকনাফ মডেল থানায় এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১৪২৬) লিপিবদ্ধ করেন৷
এতে উল্লেখ করা হয়, আজ সোমবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের পূর্বে নাফ নদীর পশ্চিম দিকের প্যারা বনে অবস্থান করছে হাতি দুটি। এগুলোকে উদ্ধার করতে ইআরটি, সিপিজি পেট্রোল টিমসহ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, বিজিবি সদস্য এবং জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রবিবার (২৭ জুন) বিকালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট সংলগ্ন নাফ নদের বালুর চরে হাতি দু’টি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন।
এর আগে গত শনিবার (২৬ জুন) টেকনাফ পৌরসভার জালিয়া পাড়া প্যারা বনে হাতি জোড়াটিকে প্রথম দেখতে পায় স্থানীয়রা।
ওই সময় বন বিভাগ হাতি দু’টিকে বনে ঢুকিয়ে দেয়ার দাবি করলেও রাত পেরিয়ে দিনে হাতি দু’টিকে শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাট বালু চরে দেখতে পায় স্থানীয়রা।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর বুনো হাতি দু’টি টেকনাফের জালিয়াপাড়া প্যারাবন থেকে উদ্ধার করে বনাঞ্চলের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের (ইআরটি) সদস্যরা। এ টিমে নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমেদ।
বর্তমানে হাতি দু’টির অবস্থান শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি ক্যাম্পের পূর্বে বালুর চরের কাছাকাছি রয়েছে জানা গেছে।
শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জায়েদ হোসাইন বলেছেন, লোকজন সেখানে যাতে ভিড় করতে না পারে সেজন্য পুলিশ সেখানে উপস্থিত রয়েছে। এছাড়া বন বিভাগের কর্মকর্তারাও সেখানে রয়েছে।
টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমেদ জানান, “গর্ভবতী হাতি টক খেতে পছন্দ করে। তাই হয়তো পাহাড় থেকে প্যারা বনে টক জাতীয় খাবার খেতে নেমেছিল। টক জাতীয় খাবারের সন্ধানে শাহপরীর দ্বীপের প্যারা বনে চলে এসেছে। এখন হাতি দু’টিকে কৌশলে বনাঞ্চলের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে নিজস্ব নৌ-যান সহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় হাতি দু’টিকে উদ্ধার করতে বেগ পেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।