সেই দুটি স্কুল ভবনের জন্য আর কত অপেক্ষা

পুরাতন ভবন অপসারণের একবছর পরেও শুরু হয়নি কাজ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৯ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

পুরাতন ভবন অপসারণের একবছরেও শুরু হয়নি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) দুটি স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ। স্কুল দুটি হচ্ছে- লামা বাজার সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বলুয়ারদীঘি সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। অবশ্য ডিজাইন পরিবর্তন করায় কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেয় চসিক। এরমধ্যে লামা বাজার সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বলুয়ারদীঘি সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে এবং ৭টি হচ্ছে জাইকার অর্থায়নে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২২ স্কুলের মধ্যে আবার ১২ টিতে নতুন ভবন, ৮টির মেরামত কাজ ও দুইটির উর্ধমূখী সম্প্রসারণ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন ভবনগুলোর মধ্যে তিনটি হবে ৮ তলা এবং বাকিগুলো ৬ তলা বিশিষ্ট। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে চার কোটি টাকা। এসমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অত্যাধুনিক শ্রেণি কক্ষ, শিক্ষার্থীদের সুপরিসর কমন রুম, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস সিস্টেম, শিক্ষকদের স্বতন্ত্র কক্ষসহ নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। ভবন নির্মাণ শেষ হলে প্রতিটি স্কুলের শ্রেণি কক্ষ সংকট নিরসন ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে গত বছরের জুন মাসে লামা বাজার ও বলুয়ারদিঘী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন অপসারণ করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি পাঠদান কার্যক্রম নিলুফার কায়সার কলেজ ভবনে স্থানান্তর করা হয়। এরপর নতুন ভবন নির্মাণ করতে গেলে তৈরি হয় জটিলতা। এক্ষেত্রে সারা দেশে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্পভুক্ত নতুন ভবনগুলোর ডিজাইন করা হয়েছে ৬ তলার। কিন্তু চসিকের স্কুল দুটি ৮ তলা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। ফলে প্রয়োজন হয় ডিজাইন পরিবর্তনের। স্কুল দুটি ছাড়াও আলকরণ সুলতান আহম্মদ দেওয়ান সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ও ৮ তলা করা হবে। এ স্কুলের পুরাতন ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া চলছে।
এবিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, তিনটি ভবনে প্রথমে ছয়তলা করার কথা থাকলেও তিনটি স্কুলে ৮ তলা করা হবে। তাই ডিজাইন পরিবর্তন করায় একটু সময় লেগেছে। নতুন ডিজাইন আমরা সিটি কর্পোরেশনকে দেখিয়েছি এবং সেটা অনুমোদনও হয়েছে। টেন্ডারও হয়ে গেছে। কাজ শুরু করে দেবো। লামা বাজার, বলুয়ারদিঘী ও আলকরণ সুলতান আহম্মদ স্কুল আমাদের প্রজেক্টভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে নিচতলা রাজস্ব কোড থেকে করতে হচ্ছে। আবার ফাইলিং অন্য কোড থেকে করা হবে। তবে সবমিলিয়ে ব্যয় চার কোটি টাকা।
এদিকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন করা হবে- কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, পাথরঘাটা মেনকা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, কৃষ্ণকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জামালখান কুসুম কুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গুল-এ-জার বেগম সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, আয়ুব বিবি সিটি কর্পোরেশন স্কুল ও কলেজ এবং কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। এরমধ্যে আয়ুব বিবি স্কুলের জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এক তলার জন্য টেন্ডারও হয়ে গেছে। কৃষ্ণকুমারী, কুসুমকুমারী ও ও গুল এজার বেগমের কাজ চলমান আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে চসিক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আর.ভি.এস (র‌্যাপিড ভিজুয়্যাল স্ক্যানিং) পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভবনকে লাল বা অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ৮৯৯ নমুনা পরীক্ষা শনাক্ত ৬৩
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে ডা. আহম্মদ ছোবহান বৃত্তির পুরস্কার বিতরণ