কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ১০ ঘণ্টা পানিতে ভাসার পর বালিয়াড়িতে এসে আটকাপড়া ৪০ ফুট লম্বা একটি তিমির মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। তার আগে প্রাণীটির দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তিমিটির ওজন আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ টন। প্রাণীটির গায়ে পেঁচানো জাল আর শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, আঘাতে এই পরিণতি হয়েছে তিমিটির। আবার একজন সমুদ্র বিজ্ঞানী আত্মহত্যার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
তিমিটির শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। এতে ধারণা করা যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। পচন ধরা দেহ থেকে ছড়ানো তীব্র দুর্গন্ধের মধ্যেও তিমিটিকে দেখতে গভীর রাতেও ভিড় করে উৎসুক মানুষ। খবর বিডিনিউজের।
তানজিলা হাসান নামে এক পর্যটক বলেন, দেশের বাইরে ছিলাম। দুই বছর পর ফিরেছি। বাবার সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে এসেছি। হোটেলে রাতের খাবার শেষে বাবার সঙ্গে সৈকতে হাঁটতে গিয়ে ভিড় দেখে এগিয়ে যাই। কাছে গিয়ে দেখি বিশাল আকৃতির একটি তিমি। এই তরুণীর ধারণা, জালে আটকা পড়ার কারণে মারা গেছে প্রাণীটি। তিনি বলেন, তাকে এভাবে মেরে ফেলাটা উচিত হয়নি। খুবই খারাপ লেগেছে।
কঙবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরওয়ার শামীম বলেন, মৃত তিমি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। বিশাল আকৃতির কারণে সেটিকে অন্য কোথাও সরানো সম্ভব ছিল না। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ক্রেন এনে বালিয়াড়িতেই ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত গর্ত করে প্রাণীটিকে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ বেলাল হায়দার জানান, ভেসে আসা মৃত তিমি ব্রাইডস জাতের। এর বৈজ্ঞানিক নাম বেলিনিওপেট্রা ইডিনি। ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, জেলেদের জালে আটকা পড়ে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।
সাঈদ মোহাম্মদ বেলাল হায়দার বলেন, তিমিটির শরীরে জালের বিশাল রশি পেঁচিয়ে আছে। মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাছ ধরার বিশাল জালে আটকা পড়ে এবং গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বা অন্য কোনো কারণে তিমিটি মারা গেছে। অন্য কী কারণ থাকতে পারে, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ বা সমুদ্র শব্দ দূষণের কারণে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দিকভ্রান্ত হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায় তিমি।