নগরীর বায়েজিদ থানাধীন হিলভিউ মসজিদের সামনে চাপাতির কোপে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাবু নামের এক যুবক আহত হওয়াসহ অস্ত্রের মহড়া দেয়ার ঘটনায় কিশোরগ্যাং চক্রের ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও ১০টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১২ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় ঘটনাটি বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বার্মা কলোনির হিলভিউ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোরগ্যাং চক্রের সদস্যরা পিস্তল, কিরিচ, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, লাঠি ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল বের করে। এ সময় তারা স্থানীয় কাউন্সিলরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের উপর এলোপাতাড়ি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বাধা দিলে পিস্তল দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে কয়েকটি ফাঁকা ফায়ার করে দোকান পাট ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। এসময় আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাবু নামের এক যুবককে পায়ে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত করে।
আহত বাবুকে ওইদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এই কিশোরগ্যাং চক্রের হামলার ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। ছবিতে একজনকে ধারালো কিরিচ এবং একজনকে অস্ত্র হাতে দেখা গেছে। ছবিটি দৈনিক আজাদীসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এই ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্ত কিশোরগ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ধারাবাহিক অভিযানে গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শেরশাহ বাংলাবাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন শাওন (২১) ও মোঃ শাকিল হোসেন প্রকাশ রনিকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত এই দুই জনের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে প্রদর্শন করা ১টি সিলভার রংয়ের এ্যালমুনিয়ামের তৈরি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রোববার সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে বার্মা কলোনি এলাকা হতে জড়িত আরো ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, এই চক্রের আরো সদস্য আছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এদের কাছ থেকে আমরা ১০টি ধারালো কিরিচ এবং একটি খেলনার পিস্তল উদ্ধার করেছি। ওইদিন যারা গুলির শব্দ শুনেছিল বলে জানিয়েছেন–সেটি আসলে চকলেট বাজির। এই বাজি ফুটিয়ে কিশোরগ্যাং সদস্যরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। অস্ত্রের যে ছবিটি পত্র–পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে–সেটি আসলে খেলনার পিস্তাল। সেটি আমরা উদ্ধার করেছি। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন থানায় মাদক, অস্ত্র, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য, ডাকাতি প্রস্তুতি ও গণধর্ষণ মামলা রয়েছে বলে আজাদীকে জানিয়েছেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা।
গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসী ও কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা হলো : সাব্বির হোসেন শাওন (২১), মো. ইমরান (২৭), মো. নজরুল (২৬), ইসমাইল উদ্দিন আকাশ (২৫), মো. হাসান (২৬), মো. সজিব (২৩), ইয়াসিন রায়হান হৃদয় প্রকাশ বাবু (২৪), মো. রমজান (২২), মো. শাকিল হোসেন প্রকাশ রনি (২৪), মো. হাবিব (৩৯), মো. রাসেল (২২), ইমরান হোসেন (৩০), মো. ইমন (২২), আরিফুল ইসলাম (৩০), মো. মানিক (৩৫), মো. সুমন (২৯) ও মো. মনির হোসেন (২৪)।