সুস্থভাবে ২৩ নাবিকের দেশে ফেরা বাংলাদেশেরই জয়

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহাত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৫ মে, ২০২৪ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর থেকে জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত জাহাজ এবং নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেছেন। গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের পুত্র রাহাত বলপ্রয়োগ বা কমান্ডো অভিযানের বিরোধিতা করে আসছিলেন শুরু থেকে। ওই সময় তিনি আজাদীকে বলেছিলেন, আমার কাছে একজন নাবিকের জীবনের দাম আমার জাহাজের দামের চেয়ে অনেক বেশি। আমি কোনো কিছুর বিনিময়ে কোনো নাবিকের জীবন হারাতে চাই না। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ যখন কমান্ডো অভিযানের প্রস্তাব দেয় তখন শাহরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদের মাধ্যমে উক্ত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন। এতে করে জাহাজে কমান্ডো অভিযান হয়নি।

রাহাত বলেন, কমান্ডো অভিযানে হয়তো আমরা জাহাজটি উদ্ধার করতে পারতাম। কিন্তু আজকের এই দিনটি হয়তো পেতাম না। ২৩ নাবিকের অক্ষত এবং সুস্থভাবে দেশে ফেরাকে বাংলাদেশের জয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গতকাল বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, আজকের এ দিনটির জন্য আমরা গত দুই মাস ধরে অপেক্ষায় ছিলাম। নাবিকরা দেশে ফিরে এসেছেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের বন্ধু যুদ্ধজাহাজগুলো যখন হুমকি দিচ্ছিল, জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ না করলে জাহাজটি ডুবিয়ে দেবে। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে যুদ্ধজাহাজগুলো যেন পিছিয়ে যায় সেই অনুরোধ করি। আমি উনাকে বলি, অভিযান চালালে আমার নাবিকদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। ২০ মিনিটের মধ্যে যুদ্ধজাহাজগুলো পিছিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এটি শুধু একটি উদাহরণ, এই কারণেই দিলাম যে, আমরা শুরু থেকে সরকারের কাছ থেকে কী পরিমাণ সাড়া পেয়েছি তা বোঝানোর জন্য। নাবিকরা যখন ছাড়া পেয়েছিল সেই দিনটি ছিল পহেলা বৈশাখ। এটি আসলে বাংলাদেশের জয়। সমুদ্রজয় করে আমাদের নাবিকরা ফিরে এসেছে। তাদের মনোবলের একটি উদাহরণ দিই। তারা দুবাই থেকে ফিরে আসতে পারতেন। দুজনের কন্যা সন্তান হয়েছে। তারা টিমের সঙ্গে জাহাজেই এসেছেন। এটি কেবল বাঙালির পক্ষেই সম্ভব।

জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হওয়া ২৩ নাবিকই বারবার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন রাহাতের কাছে। তিনি সকলকেই বুকে জড়িয়ে ধরে গায়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলছিলেন, আমার যা চাওয়া ছিল তা পূর্ণ হয়েছে। আমার নাবিকেরা দেশে ফিরে এসেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিএনএসবির সভা করার চেষ্টা ডা. রবিউল হোসাইনের, বন্ধ করে দিল পুলিশ
পরবর্তী নিবন্ধসজাগ থাকতে হবে, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে