সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষককে বিদায়

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | রবিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষকের কর্মজীবনের বিদায়বেলায় শত শত শিক্ষার্থী ও সহকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত মো. তাহের। তিনি দীর্ঘ ৩৪ বছর শিক্ষকতা করেন এ বিদ্যালয়ে। গতকাল শনিবার শেষ কর্মদিবসে তাকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফুল দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সহকর্মী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

তার বিদায় উপলক্ষে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আলোচনা সভাসহ নেওয়া হয় বর্ণিল আয়োজন। ফুলের মালা দিয়ে সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। সেই গাড়িতে করে বাড়ি ফেরেন তিনি। গতকাল সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শীতলপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যাচের পক্ষ থেকে শিক্ষককে ক্রেস্ট দেওয়া হয়। প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুমন দাসের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ, ভাটিয়ারী বিজয় স্মরণী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শিব শংকর শীল, সোনাইছড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন ছাত্র মো. নাজিমুদৌলা, প্রাক্তন ছাত্র মো. জহুরুল আলম, বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য মো. মাহবুবুল আলম, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি গিয়াসুল মাহমুদ চৌধুরী তসলিম, প্রাক্তন শিক্ষক নেপাল কান্তি রায়, সমীরণ বিশ্বাস, আনোয়ারুল মোস্তফা, শিক্ষকশিক্ষিকাবৃন্দ, প্রাক্তন এবং স্কুলের বর্তমান অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীবৃন্দ।

শিক্ষক আবুল হাসনাত মো. তাহের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমি বিদায় নিচ্ছি, কিন্তু দোয়া রেখে গেলাম। তোমরা নিজেদের মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদায় বড় কষ্টের, তবুও মানতে হবে। আমাকেও এভাবে একদিন বিদায় নিতে হবে। একজন শিক্ষকের বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে তাকে সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্মরণে রাখতেই এমন ব্যতিক্রমী ও বর্ণাঢ্য আয়োজন। বিজয় স্মরণী কলেজের অধ্যক্ষ শিব শংকর শীল বলেন, একজন শিক্ষক যখন তার চাকরিজীবন শেষে বাড়ি ফিরে যান, তখন অনেক কষ্ট পান। সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের রেখে চলে যাওয়া খুবই কষ্টের। বিদায়ের কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্য ব্যতিক্রমী এমন আয়োজন করা হয়েছে। সীতাকুণ্ডে এই প্রথম এমন উৎসবের বিদায়। শুধু আবুল হাসনাত মো. তাহের নন, প্রতিটি শিক্ষকের বিদায় এমনই হওয়া উচিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠা ছাড়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব নয়
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের বার্ষিক সম্মেলন