লন্ডনে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে নিজের আন্তরিকতার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে থাকা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার বিবিসি বাংলা প্রচার করে। লরা কুয়েন্সবার্গকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে রানিকে নিয়ে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন এবং গুমের অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের।
নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে দীর্ঘ সামরিক শাসনের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ দীর্ঘ সময় সামরিক শাসকের অধীনে ছিল। সেটা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হোক কিংবা প্রকাশ্যে বা গোপনেই হোক। ১৯৭৫ সালে যখন আমার বাবাকে হত্যা করা হয়, তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আপনি জানেন আমার পুরো পরিবার- আমার মা, ভাইয়েরা, তাদের স্ত্রীরা এবং অন্য সদস্যরা, ১৮ জনকে হত্যা করা হয়। তখন থেকে পরের ২১ বছর পর্যন্ত কোনো না কোনো সময় আমাদের দেশে সামরিক শাসন ছিল। বারবার।’
সেই অবস্থা থেকে গণতন্ত্র ফেরাতে নিজের ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আনুমানিক ২০ বার সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল, প্রতিবারই রক্তক্ষয় হয়েছে। কোনো গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। আমার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আমার সংগ্রাম করতে হয়েছে। সেনা শাসক দেশ শাসন করেছে। তারা রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। তারা কখনও মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চায়নি। তারা সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য। শুধু আওয়ামী লীগের সময় আপনি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে পাবেন।’
এই পর্যায়ে কুয়েন্সবার্গ বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে শুনেছি যে আপনি হলফ করে বলেছেন, সেসব নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
তখন শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই, এটা আমার সংগ্রাম। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা আমার সংগ্রাম।’
গুমের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষই অভিযোগ তুলতে পারে। কিন্তু তার কতটুকু সত্য, তা আপনাকে বিচার করতে হবে। তার আগে কারও কোনো মন্তব্য করা উচিৎ না।’







