সেনাবাহিনী সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা ধরনের বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হয়ে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেস অনুষ্ঠানে সেনাসদস্যদের তিনি এ পরামর্শ দেন। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার বাইরে অবস্থানরত কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজকে বলেন, সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা বক্তব্য নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, যারা বিভিন্নভাবে সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভান্তি ছড়ায়, তারা একদিন ভুল বুঝবে। আর যারা এসব করে, তারা সন্তান সমতুল্য। এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। কেউ যাতে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে না পারে, সেনাপ্রধান সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। খবর বিডিনিউজের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল সেনা সদস্যকে পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামান। তিনি বলেন, দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আইন–শৃঙ্খলা রক্ষায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে সেনাবাহিনীর মাঠে থাকার প্রসঙ্গ ধরে সেনাপ্রধান সবার সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
একজন সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অনুসন্ধান চলার বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামান। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। কোনো সেনা কর্মকর্তার রাজনৈতিকভাবে জড়িত হওয়া সুযোগ নেই। অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরেক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগের তদন্তের বিষয়টিও উঠে অসে সেনাপ্রধানের বক্তব্যে। তিনি কঠোরভাবে সবাইকে সতর্ক করে দেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেন।
তবে তিনি এও বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়। সেনা সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, পরিবারের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হওয়ার তাগিদ দেন সেনাপ্রধান। তিনি মাদকের ব্যাপারেও সকলকে সতর্ক করেন।
বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে আছে। তারাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।