নগরীর আগ্রাবাদ পানওয়ালা পাড়ায় সুপ্তি মল্লিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্বামী বাসুদেব চৌধুরী ও ভাসুর অনুপম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডবলমুরিং থানার এসআই সুমিত চৌধুরী। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ আজাদীকে জানান, গত ৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে সুপ্তির পিতা সাধন কুমার মল্লিক বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় তার স্বামী ও ভাসুরকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রিমান্ডের শুনানি আগামী রোববার অনুষ্ঠিত হবে।
ওসি সদীপ বলেন, ৬ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে বাসুদেব চৌধুরী ও অনুপম চৌধুরীকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমিত বড়ুয়া। বুধবার রাত থেকেই দুই ভাই ডবলমুরিং থানা পুলিশের হেফাজতে ছিল। প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তরের পর নগরীর অভয়মিত্র শ্মশানে সুপ্তিকে দাহ করা হয় জানিয়ে তার পিতা সাধন কুমার মল্লিক বলেন, তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে সুপ্তি বড়। গত ১৩ আগস্ট সুপ্তির সাথে পটিয়ার বাসুদেব চৌধুরীর বিয়ে দেন। বাসুদেব জামালখানে একটি ওষুধের দোকানে চাকরী করে। বিয়ের পর সুপ্তিকে সে পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সাধন কুমার মল্লিক বলেন, বিয়ের ১০ দিন পর আমার মেয়ে জানতে পারে যে বাসুদেবের সাথে আরো কয়েকটা মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে। সুপ্তি এর প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন সময় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। বিয়ের দশ দিন পর সুপ্তিকে তার স্বামী পানওয়ালাপাড়াস্থ নাসিমা মঞ্জিলের ৫৩ নং ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। সেখানে আগে থেকে বাসুদেবের বড় ভাই অনুপম চৌধুরী থাকতেন। এখানে নিয়ে আসার পর সুপ্তির উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বাসুদেবের পাশাপাশি তার বড় ভাই অনুপমও আমার মেয়ের উপর নির্যাতন করতে থাকে। মেয়ে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তার মাকে ফোন করে বিষয়গুলো জানাতো আর মা মেয়ে কান্না করতো। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বাসুদেব আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলে যে, সুপ্তির সাথে তার বিকেল চারটার দিকে কথা হয়েছিল, এর পরে আর সে ফোন ধরছে না। আপনারা কেউ একজন পানওয়ালা পাড়ার বাসায় আসেন। এ কথা বলেই ফোন কেটে দেয় বাসুদেব আমার স্ত্রী ও ছেলে রাত আটটার দিকে পানওয়ালাপাড়ার বাসায় এসে খাটের উপর মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে আমিও আসি। আমরা থাকাবস্থায় পুলিশ আসে। এখন ভাবছি, প্রথম যেদিন মেয়ে নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিল, তখন গুরুত্ব দিলে আজ মেয়েকে হারাতে হতো না। তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের কাছে যা শুনেছি, তাতে আমি নিশ্চিত যে বাসুদেব ও তার ভাই অনুপম মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তৃতীয় কাউকে দিয়ে আমার মেয়েকে খুন করিয়েছে।