দুই চিরবৈরী দেশ পাকিস্তান ভারতের দ্বৈরত দেখার সুযোগ দিলো না বেরসিক বৃষ্টি। ক্যান্ডিতে বৃষ্টির আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। ভারতের ইনিংসে দুই দফা কাভার দিয়ে পিচ ঢাকায় ব্যস্ত ছিলেন মাঠ কর্মীরা। তারপরও রোহিত শর্মার দল পুরো ইনিংস শেষ করে মাঠ ছাড়েন। এরপর আবার নামে বৃষ্টি। ভারতের দেয়া ২৬৭ রানের লক্ষ্যে আর মাঠে নামা হয়নি পাকিস্তানের।
প্রত্যাশিতভাবে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাপিয়ে জিতে গেলো বৃষ্টি। ম্যাচ হলো নিস্ফলা। দুই দল পয়েন্ট ভাগাভাগি করলো। পাকিস্তান ২ ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে নিশ্চিত করে নিয়েছে সুপার ফোর। ১ পয়েন্ট পাওয়া ভারত তাদের গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলবে নেপালের সঙ্গে।
বৃষ্টির চোখ রাঙানি মাথায় রেখে দুই দলই ব্যাটিং নেওয়ার জন্য উন্মুখ ছিল। রোহিত টসে জিতে উল্টো ভাবেননি। ব্যাটিং নেন। এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তানের হাইভোল্টেজ এই লড়াইয়ে বারকয়েক বাগড়া দেয় বৃষ্টি। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ৪.২ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫ রান তোলার পর বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়। বৃষ্টির পর খেলতে নেমে পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির তোপের মুখে পড়ে ভারত। শাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত (২২ বলে ১১)। ১৫ রানে প্রথম উইকেট যায় ভারতের। নিজের পরের ওভারে আফ্রিদির আরেকটি দুর্দান্ত ডেলিভারি। এবার ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড কোহলি (৭ বলে ৪)। ২৭ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত। শ্রেয়াস আয়ার তবু চালিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। তবে অতি মারমুখী হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। হারিস রউফকে পুল খেলতে গিয়ে ফখর জামানের ক্যাচ হন আয়ার। ৯ বলে তিনি করেন ১৪। ১১.২ ওভারে ৩ উইকেটে ৫১ রান তোলার পর ফের নামে বৃষ্টি। বৃষ্টি থামার পর খেলা শুরু হলে আঘাত হানেন হারিস রউফ। ব্যাটে লেগে ইনসাইডেজ হয়ে শুভমান গিল (৩২ বলে ১০) হন বোল্ড। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন হার্দিক আর ইশান। পঞ্চম উইকেটে তারা গড়েন ১৪১ বলে ১৩৮ রানের জুটি। তবে দুজনকেই ফিরতে হয়েছে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে। ৮১ বলে ৯ চার আর ২ ছক্কায় ঝোড়ো ৮২ করা ইশানকে ফিরিয়ে বড় জুটি ভাঙেন হারিস রউফ। হার্দিক ব্যক্তিগত ৮৭ রানে হন শাহিন শাহ আফ্রিদির শিকার। ৯০ বলের ইনিংসে ৭টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান হার্দিক। সেট দুই ব্যাটার ফেরার পর ভারতের বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। শেষদিকে ভারতীয়দের চেপে ধরেন নাসিম–আফ্রিদিরা। ফলে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে ২৬৬ রানেই থেমে যায় ভারতের ইনিংস। পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি ৩৫ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট। নাসিম শাহ ৩৬ আর হারিস রউফ ৫৮ রান খরচায় নেন তিনটি করে উইকেট। ২৬৬ রানে তাদের অলআউট করে লক্ষ্য অতিক্রমের স্বপ্নই দেখছিল পাকিস্তান। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টি দুই দলের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে জল ঢালে। অবশ্য ভারত সুপার ফোরে উঠলে আবারও পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা নিশ্চিত সেদিকে তাকিয়ে থাকবে।