ক্রিকেট মাঠে অনেক সময়ই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধার অবকাশ থাকে। কিন্তু মঙ্গলবারের ম্যাচে বাংলাদেশের সুপার ওভারে ব্যাটিং করবেন কে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশই থাকার কথা নয়। একজন নামলেও সেটি হওয়ার কথা রিশাদ হোসেন। অথচ তাকে ব্যাটিংয়ে নামানোই হলো না। যে ব্যাটসম্যান ১৪ বলে ৩৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সেই ব্যাটসম্যানকে ডাগআউটে বসিয়ে রেখে সুপার ওভারে ১১ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। কোচ–অধিনায়ক–টিম ম্যানেজমেন্টকে নিয়ে তাই বয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন ও সমালোচনার ঝড়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে উত্তর মেলেনি। তারা কেউই যে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয় সৌম্য সরকারকে। তার কাছে প্রথম প্রশ্নই ছুটে গেল সুপার ওভারে রিশাদের অনুপস্থিতি নিয়ে। তিনি জানালেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোচ ও অধিনায়ক। কোচ আর অধিনায়ক পরিকল্পনা করেছেন। এটা তাদের পরিকল্পনার একটা অংশ ছিল। উনারা চিন্তা করেছেন যে, মূল ব্যাটসম্যানদেন পাঠাবেন এই সময়টাতে। সুপার ওভারে শুরুতে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয় সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানকে। তিনে নামানো হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে।
বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনের সামনে ডানহাতি ব্যাটসম্যান রিশাদকে না পাঠিয়ে বাঁহাতি বলেই শান্তকে পাঠানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্ন উঠল। সৌম্য এখানেও বললেন কোচ–অধিনায়কের কথা। এটা একটা ভালো প্রশ্ন। সত্যি বলতে কী এটা নিয়ে তো সবাই আমরা চিন্তা করি নাই। এটা কোচ–অধিনায়ক চিন্তা করেছেন। ওখানে আমরা কিন্তু জানতাম না যে আকিল হোসেন বল করবে। যদি আমরা দুটো বাঁহাতি নেমে যেতাম, ওই সময় যদি কোনো অফ–স্পিনার আসতো তখন কিন্তু আমরা বিপদে থাকতাম। এজন্য ডানহাতি–বাঁহাতি ছিল। রিশাদকে না নামানোর পরও অবশ্য জয়ের সুবর্ণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। সুপার ওভারে কোনো বৈধ ডেলিভারি হওয়ার আগেই ওয়াইড–নো বলের সৌজন্যে চার রান পেয়ে যায় তারা। তখন ছয় বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র সাত রানের। পাশাপাশি ছিল একটি ফ্রি হিটও। সেই ফ্রি হিটে মাত্র ১ রান নিতে পারেন সৌম্য। পরের বলে সাইফ পারেননি রান নিতে। এরপর তিনিও নেন সিঙ্গল। চতুর্থ বলে বড় শটের চেষ্টায় আউট হয়ে যান সৌম্য। আকিল পরে ওয়াইড করেন আরও একটি। কিন্তু সাইফ ও শান্ত শেষ পর্যন্ত পারেননি সমীকরণ মেলাতে। সৌম্য অবশ্য এখানে দায় নিলেন নিজের কাঁধেই।
এটা বলতে পারেন আমিই ব্যর্থ। তখণ বাঁহাতি স্পিনার ছিল। আমারও নিজের আত্মবিশ্বাস ছিল যে, একটা বাউন্ডারি এখান থেকে আদায় করতে পারব। এটাও ঠিক উইকেট ওরকম ছিল না যে সহজে চার বা ছক্কা মারা যাবে। বলটাও অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। ৫০ ওভারের পরের বল। বলটা একটু ধীরগতিতে আসছিল এবং টার্নও ছিল অনেক বেশি। সৌম্য বলেন মূল ম্যাচ সহ ম্যাচে তিনটি ফ্রি হিট পেয়েও আমি কিছু করতে পারিনি। আগেও আমার অনেকগুলো ফ্রি হিট আছে, যেগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। সুপার ওভারে যে বলগুলো খেলেছি, প্রায় সবগুলোই ফ্রি হিট মারার মতো ছিল। আমার টার্গেটই ছিল যে বল ছয় মারার বা বাউন্ডারি মারার। ওটা আমি পারিনি।
হয়তো এখানে আমার কোনো ঘাটতি আছে। তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে রিশাদকে না নামিয়ে শান্তকে নামানোর কারণও জানালেন সৌম্য। বাঁহাতি স্পিনার বোলার বল করছিল তখন। এসময় অবশ্যই একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যাওয়াটাই ছিল ভালো অপশন ।