প্রত্যেক পরিবারেই কতকগুলো নিয়ম, আদর্শ, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, বিধিনিষেধের মধ্যে দিয়ে প্রতিটি মানুষকে বড় করে তোলে। তাই পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়স্বজনের চালচলন, শিষ্টাচার, পছন্দ–অপছন্দ আদান–প্রদানের মাধ্যমে সমাজের প্রত্যেকটি সামাজিকীকরণের বিষয়ে অবগত থাকার কারণে সমাজস্বীকৃত ব্যক্তিত্ব নিজের মধ্যে বিকাশ লাভ করে। ব্যক্তিগত জীবনধারার ওপরে ব্যক্তিত্ব অনেকাংশে নির্ভর করে। মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে নিজের জানার পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে যে যত কোনো বিষয়ে পরিষ্কার জ্ঞান, ধ্যানধারণা রাখতে পারব্তেসে ততটা সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্যেকটি বিষয়কে তুলে ধরতে সক্ষম হবে। ব্যক্তিগতভাবে পোশাক নির্বাচন, হাঁটার ভঙ্গিমা, কথা বলার ভঙ্গিমাগুলো একজন মানুষের ব্যক্তিত্বকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে থাকে। বর্তমান সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়, মানুষ নিজের প্রয়োজনের জন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র ক্রয় না করে অন্যকে দেখানোর জন্য সামর্থের বাইরে গিয়া নিজের মধ্যে মিথ্যা চাহিদা তৈরি করে। এসবের মাধ্যমেও মানুষ নিজের ব্যক্তিত্বকে হারিয়ে ফেলে। অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, অন্যের কুৎসা রটনা, অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার মনমানসিকতা নিজের ব্যক্তিত্বকেই বিনষ্ট করে দেয়। তাই অন্যকে সম্মান প্রদর্শন করার মাধ্যমে, অন্যের কথা শোনার মন–মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং সময় নেতৃত্ব দানের মাধ্যমেও ব্যক্তিত্বের বিকাশ লাভ করে। ব্যক্তিত্ব একটি মানুষের বড় গুণ বা সম্পদ। যার ব্যক্তিত্ব নেই সে সমাজে কাছে মূল্যহীন। ব্যক্তিত্বহীন মানুষ কখনো একটি দেশের সম্পদ হতে পারে না। মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে ব্যক্তিত্বের জন্য। সুন্দর চেহারা নয় বরং ব্যক্তিত্বের মানবিক গুণাবলির কারণে মানুষ ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ব্যক্তিত্বকে ধরে রাখতে মানুষকে কঠোর পরিশ্রমের দরকার নেই। ভেতরের মানুষকে সঠিক ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে। ব্যক্তিত্বকে সঠিক ও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে প্রত্যেকটা মানুষের উচিত খারাপ দিকগুলো ছুড়ে ফেলে দেয়া। অশালীন ভাষা ব্যবহার মানুষের ব্যক্তিত্বকে অনেক নিচে নামিয়ে দেয়। ছোট হোক বড় হোক না কেন, সবাইকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। অনেকের ধারণা সম্মান দিতে গিয়ে সে নিজে ছোট হয়ে যাবে। এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। বরং সম্মান দিলে তার সম্মান আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। ইতিবাচক চিন্তা ব্যক্তিত্ব বিকাশে যেমন ভূমিকা রাখে ঠিক তেমনি সমাজের উপরও প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে। নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেকে সব সময় দূরে রাখা অবশ্যই ব্যক্তিত্ববানদের কাম্য।