মানুষের মন জয় করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে তন্মধ্যে সুন্দর ব্যবহার অন্যতম। সুন্দর ব্যবহার সুন্দর মনের পরিচয় বহন করে। ব্যবহারে বংশের পরিচয় বহুল ব্যবহৃত ও প্রচলিত একটি বাক্য। যদিও বংশের মর্যাদা বা গৌরব এখন আর তেমন নেই কিন্তু বর্তমানে সুশিক্ষাই সুন্দর ব্যবহারের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে সার্টিফিকেট অর্জন করে শিক্ষিতের খাতায় নামটা লেখা যায় কিন্তু আচরণে বা ব্যবহারে যদি মানুষের মনে ব্যথা বা আঘাত লাগে কথায় কথায় অহংকারের ভাব পরিলক্ষিত হয় তবে সে শিক্ষা সার্টিফিকেট সর্বস্ব শিক্ষা বলে কথিত হয়। মানুষ তখন তার সঙ্গ এড়িয়ে চলে।
ধীরে ধীরে সে একা হয়ে পড়ে। কথায় বলে অহংকার পতনের মূল। যে শিক্ষা মানুষের মনে অহংকারের জন্ম দেয় কথার আঘাতে ব্যথা দেয় মানুষকে সম্মান দেয় না। সে শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না। নিশ্চিত করে বলা যায়, শিক্ষা হয়ত সে লাভ করেছে কিন্তু সুশিক্ষার সুবাতাস তার হৃদয় মনকে স্পর্শ করেনি। যার কারণে অজ্ঞতার আঁধারে সে নিমজ্জিত।
আমরা জানি ফলের ভারে গাছ নুয়ে পড়ে যে যত জ্ঞানী সে তত নম্র ভদ্র ও সুন্দর ব্যবহারের অধিকারী হয়। মানুষ যত উন্নতির দিকে যায় সে তত নত হয়ে যায়। ফলবতী বৃক্ষের মত। প্রকৃতি আমাদের সে শিক্ষাই দেয়।
অপরদিকে সার্টিফিকেটের আলোয় ঝলমল না করা অল্পশিক্ষিত হয়েও যদি সুন্দর আচরণে মানুষের মনকে জয় করে নিয়ে সামাজিকতায় এবং মানবতায় নিজেকে উৎসর্গ করে দেয় তবে সে মানুষগুলোর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের চেয়ে হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটে ধনী এবং আলোকিত হয়। সে আলোয় উত্তাপ নেই, আছে স্নিগ্ধতা। লোকে বলে শিক্ষার আলোয় দেশ আলোকিত হয় কিন্তু মানবতার আলোয় হয় মানুষের হৃদয় আলোকিত। সে আলোয় দূর হয় জগতের অন্ধকার। সে আলোর বড় বেশি প্রয়োজন আজ জগতের জন্য।