অন্তবর্তীকালীন সরকারকে হটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদানে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত একজনের প্রাণ গেছে বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আল-জাজিরা। খবর বিডিনিউজের।
এ নিয়ে অভ্যুত্থানের দিন থেকে শুরু করে চারদিনে সুদানে সেনা-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১১ তে পৌঁছাল বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে সুদানের পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করে সোমবার বেসামরিক নেতৃত্বাধীন যে অন্তবর্তী সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল, সেই সরকারকে পুনর্বহালের আহ্বান জানিয়েছে। এ বিবৃতির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, অন্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রও সুদানের বিক্ষোভকারীদের পাশে আছে। সুদানের সামরিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের সবার স্পষ্ট বার্তা- সুদানের জনগণকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করতে দিতে হবে এবং বেসামরিক নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারকে পুনর্বহাল করতে হবে, বলেছেন তিনি।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে সোমবার থেকেই সুদানে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ জানাচ্ছে; অনেক মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা নতুন জান্তা সরকারের নির্দেশ মানতে রাজি হচ্ছেন না। তারা পদত্যাগ বা দায়িত্ব হস্তান্তরেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে বিমান পরিবহন খাতের ইউনিয়নগুলো সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে আটা, গ্যাস ও জরুরি ওষুধ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বস্ত করেছে তারা। বৃহস্পতিবারও খার্তুমের প্রধান বাজার, ব্যাংক ও ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ ছিল। হাসপাতালগুলো কেবল জরুরি সেবা চালু রেখেছে। ছোট ছোট দোকানপাট খোলা রয়েছে, রুটির জন্য বিভিন্ন দোকানের সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে। এদিন খার্তুমের কাছে বাহরি শহরে বিক্ষোভে অভ্যুত্থানবিরোধীদের ওপর তাজা গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় বুরহান বলেছেন, বিলুপ্ত অন্তবর্তীকালীন কাউন্সিলে জায়গায় নতুন একটি সরকার গঠনে সেনাবাহিনী আবদাল্লা হামদকের সঙ্গে আলোচনা করছে। হামদক ক্ষমতাচ্যুত অন্তবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমরা তাকে (হামদক) বলেছি, আমরা আপনার জন্য মঞ্চ খালি করে দিয়েছি। তিনি বাধাহীনভাবে নতুন সরকার গঠন করতে পারেন, আমরা হস্তক্ষেপ করবো না। যাকে যাকে উনি নিয়ে আসতে চান, আনতে পারেন। আমরা হস্তক্ষেপ করবো না, বলেছেন বুরহান।