পহেলা বৈশাখ। এই উৎসব কোনও ধর্মের নয়, সংস্কৃতির উৎসব। বাঙালির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ। নববর্ষ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মেলা বসে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বৈশাখী মেলা তাৎপর্য বিশাল ও তাৎপর্যময়। যা জব্বার এর বলী খেলা নামে বিখ্যাত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, নানা ধরনের কুটিরশিল্প, খেলনাসহ হরেক রকম পণ্যের সমাহার ঘটে এ মেলায়। এছাড়াও থাকে যাত্রা, পুতুলনাচ, নাগরদোলা, সার্কাসসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টিজাতীয় খাবারও পাওয়া যায় মেলায়। এমেলায় বসে বাঙালির ঐতিহ্যবাহি নানা খাবারের পশরা। হরেক রকমের মিষ্টি, বাতাসা, খই, মুড়ি, আচার সহ নানান রকম বাহারী বাঙালি খাবার এ মেলার প্রধান আকর্ষণ। এছাড়া রং–বেরঙের বেলুন আর বাঁশের বাঁশির সুর আর কচিকাচাদের কোলাহলে মুখরিত থাকে মেলা প্রাঙ্গন। বৈশাখী মেলায় গিয়ে তালপাতার তৈরি হাতপাখা কেনেন না এমন লোকের সংখ্যা খুব কম। লোহা ও কাঠের তৈরি সামগ্রীর মধ্যে দা, বঁটি, কাস্তে, ছুরি, খুন্তি, কোদাল, শাবল, পিঁড়ি, জলচৌকি, চেয়ার, টেবিল, খাট–পালঙ্ক ইত্যাদি পাওয়া যায়। বৈশাখি মেলা আনন্দের পাশাপাশি আমাদের জীবনের অনেক প্রয়োজন মেটায়। বৈশাখী মেলা শুধু কেনাকাটার জন্যই নয়, বরং এটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আনন্দের মিলনমেলা। নববর্ষে ঘরে ঘরে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশীদের আগমন ঘটে। মিষ্টি–পিঠা–পায়েসসহ নানা রকম লোকজ খাবার তৈরির ধুম পড়ে যায়। একে অপরের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় চলে। সব মিলিয়ে নববর্ষের দিনটি কাটে আনন্দ উল্লাসের মধ্যে দিয়ে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।