সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ, সব ঘটনার তদন্ত ও বিচার চায় ঢাকা

| বুধবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর জয়ন্ত কুমার সিংহ নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনে পাঠানো প্রতিবাদপত্রে সবগুলো সীমান্ত হত্যার ঘটনার তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই প্রতিবাদপত্র পাঠানোর কথা জানিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার এই ধরনের নির্মম কাজের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে, সীমান্তের সব ঘটনার তদন্ত, দায়ীদের চিহ্নিত করতে এবং বিচারের আওতায় আনতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।

গত সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সীমান্তে গুলিতে ১৫ বয়সী কিশোর জয়ন্তর মৃত্যুর খবর দেয় পুলিশ। জয়ন্তর মরদেহ বিএসএফ নিয়ে গেছে এবং ওই কিশোরের বাবাসহ দুজন আহত হয়েছেন বলেও পুলিশের ভাষ্য। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় সীমান্তে নিহত হন ১৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস। স্বর্ণা দাসের প্রাণহানির পর গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে ওই ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর চারদিনের মাথায় প্রায় একই রকমভাবে নিহত হয় জয়ন্ত। পাঁচ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভারতীয় হাই কমিশনে আরেকটি প্রতিবাদী নোট পাঠাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এর আগে গতকাল বিকালে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হবে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা হয়ত খেয়াল করেছেন, আমরা প্রতিবাদের ভাষা অনেক শক্ত করেছি। আমাদের এটুকুই এই মুহূর্তে করার আছে আসলে। আমরাতো তাদের সাথে যুদ্ধ বাঁধাব না। এটা যেহেতু অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি ইস্যু, সেটা কিন্তু আমরা প্রতি মুহূর্তে বলছি। আমরা আশা করছি, এটা তারা বিবেচনায় নেবে।

ওই প্রতিবাদপত্রের বক্তব্য তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীমান্তে প্রাণঘাতি নয় এমন কৌশল নেওয়া এবং হত্যাকাণ্ড বন্ধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অব্যাহত আশ্বাসের পরও এই ধরনের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের কথা হচ্ছে, কোনো দেশের নাগরিক যদি বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অন্য কোনো দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে, তাহলে তাদেরকে ওই দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে; কোনো অবস্থাতেই নির্যাতন ও প্রাণহানির মুখে ফেলা যায় না।

চোরাচালানসহ আন্তঃসীমান্ত নানা অপরাধের কারণে সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটে আসছে বলে বিভিন্ন সময়ে যুক্তি দিয়েছে ভারত সরকার। কিন্তু এবার নিহত দুজনই শিশু। মানবাধিকার সংস্থা আইন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেছে ১৩ জনের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের পদত্যাগ
পরবর্তী নিবন্ধমামলায় আসামি মৃত ব্যক্তি, ব্যবস্থা নিতে আদালতে ছেলের আবেদন