সীমান্ত জনপদ টেকনাফে মাদক চোরাচালান রোধে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে একটি কুকুর! তল্লাশি চৌকিতে নাক দিয়ে শুকে শুকে অনায়সেই মাদকের চালান শনাক্ত করে দিচ্ছে জার্মান থেকে আনা এই প্রশিক্ষিত কুকুর! জার্মান শেফার্ড জাতের কুকুরটির নাম ‘জ্যাক’।
বিজিবি থেকে জানানো হয়েছে, জার্মান শেফার্ড ‘জ্যাক’ বিজিবির এক বিশেষ সিপাহী! বিজিবি সদস্যদের মতো ‘জ্যাক’ও বিজিবির কে–৯ ইউনিটের সদস্য হয়ে সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছে। তিন বছর বয়সী এই জার্মান শেফার্ড প্রশিক্ষণ পেয়েছে বিজিবির নিজস্ব কে–৯ ইউনিটেই। বর্তমানে তার ওজন ২৯ কেজি হলেও তার ঘ্রাণশক্তি আর সতর্ক দৃষ্টি মাদককারবারীদের কাছে পরিণত হয়েছে আতঙ্কে। বিজিবির দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছরেই জ্যাক শনাক্ত করেছে ৩২ হাজার ২৭০ পিস ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। আর জ্যাকের সহায়তায় ৭জন মাদককারবারীকে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি। শুধু তল্লাশি নয়, কঠিন অভিযানের সময়ও জ্যাক পৌঁছে যায় এমন জায়গায়; যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া কঠিন– এমনটাই জানিয়েছে বিজিবি। জ্যাকের প্রশিক্ষক বিজিবিতে দায়িত্বরত ল্যান্সনায়ক অতনু বড়ুয়া জানান, কারো কাছে বা কোথাও মাদক থাকলে জ্যাক বিজিবি সদস্যদের বিভিন্নভাবে ইঙ্গিত করে। জ্যাকের শনাক্তকরণ ইঙ্গিত পেয়ে বিজিবি সদস্যরা মাদকের চালান থাকার বিষয়টি বুঝতে পারেন।
ল্যান্সনায়ক অতনু বড়ুয়া বলেন, ‘বিজিবির বিশেষ ইউনিট ‘কে–৯ ইউনিট’কে অনেক সহায়তা করছে জ্যাক। তার মাধ্যমে মাদক উদ্ধারে আমরা আরো বহু সফলতা পাবো বলে আশা করছি।’
বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ নূর ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের গাড়ির নানা অংশ– যেখানে মানুষে হাত প্রবেশ করানো যায় না বা গাড়ির ইঞ্জিনের গভীর স্থানে পৌঁছা যায় না, সেখানেও নাকে শুকে মাদকের চালান শনাক্ত করতে পারে জ্যাক। এছাড়া চাকাসহ অন্যান দুর্ভেদ্য অংশ থেকেও মাদক শনাক্ত করতে পারে। এতে আমরা সহজে মাদক ধরতে সক্ষম হই।’
বিজিবি জানিয়েছে, সড়কের তল্লাশি চৌকিতে জ্যাকের মাধ্যমে মাদক উদ্ধারে যে সফলতা মিলছে তা আগে পারা যেতো না।
অন্যদিকে জ্যাকের সঙ্গে সমপ্রতি বিজিবিতে যুক্ত হয়েছে আরেকটি মাদক শনাক্তকারী কুকুর ল্যাবরাডর রেট্রিভার প্রজাতির ‘হেনরি’। এখন সীমান্তে মাদকবিরোধী যুদ্ধে তারা একসঙ্গে কাজ করছে। দেশকে মাদকমুক্ত রাখতে মানুষের পাশাপাশি চারপায়ের এই নিবেদিত সৈনিকও রাখতে পারে অমূল্য অবদান এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।











