কক্সবাজারের উখিয়া–টেকনাফ সীমান্তজুড়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে আরাকান আর্মি এবং জান্তা সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে তীব্র যুদ্ধ চলছে। এতে গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা। মিয়ানমার সীমান্তজুড়ে গত রোববার রাতভর গোলার শব্দ ভেসে এসেছে। এতে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুরউদ্দিন চৌধুরী জানান, মধ্যখানে দীর্ঘ বিরতির পর মিয়ানমার সীমান্তে ফের যুদ্ধ চলছে। বিশেষ করে, রহমত বিল, আনজুমান পাড়া, বালুখালী, নরবনিয়া ও দামংখালী এলাকায় বেশি। এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। আবার অনেকে সীমান্তে যুদ্ধবিমান দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের দীর্ঘ বিরতির পর আবার লড়াই চলছে। সীমান্তের কাছে গুলি ও মর্টারশেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারীদের মাঝে।’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত রাতে (শনিবার দিবাগত রাতে) সীমান্তের ওপার থেকে কিছুক্ষণ পরপর থেমে থেমে বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। অনেক সময় ধরে যুদ্ধবিমান দেখা গেছে। মূলত রাখাইনে বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। সীমান্ত পিলার বিআরএম–১৮ থেকে আনুমানিক ১৫ কিলোমিটার পূর্ব–দক্ষিণ দিকে এবং শূন্য লাইন থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভেতরে বলিবাজার এলাকায় এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, ‘রাতে হঠাৎ বড় ধরনের বোমার মতো বিকট শব্দ হয়। ফলে সীমান্তের মানুষ সবাই ফোনে ভীত হয়ে পড়ার কথা জানিয়েছেন। আমি বলেছি, নিরাপদে থাকার জন্য। আমার সীমান্তের মানুষ নির্ঘুম রাত পার করেছে।’
এদিকে নতুন করে শুরু হওয়া গোলাগুলিতে আবারও দুঃস্বপ্নে ফিরেছে সীমান্তের মানুষ। গত এক মাসেই অন্তত চার থেকে পাঁচবার মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়েছে হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন গ্রামে।
এ বিষয়ে উখিয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (৬৪ বিজিবি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসীম উদ্দিন বলেন, ‘হোয়াইক্যং বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকার নিকটবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সীমান্ত পিলার বিআরএম–১৮ থেকে আনুমানিক ১৫ কিলোমিটার পূর্ব–দক্ষিণ দিকে এবং শূন্য লাইন থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভেতরে বলিবাজার এলাকায় এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে সে দেশের অভ্যন্তরের ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, ‘ওপারে গোলাগুলি ঘটনায় সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সীমান্তে আমাদের সব আইনশৃক্সখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’












