সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাদেক মাস্তান উচ্চ বিদ্যালয়, সাদেক মাস্তান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাদেক মাস্তান কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও বাইতুল মামুর ইসলামি নূরানী মাদ্রাসাসহ প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তা পার হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। অনেক সময় দ্রুতগামী যানবাহনের ধাক্কায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সড়কে জেব্রক্রসিং থাকলেও গাড়ির গতিরোধ না করেই বেপরোয়া ভাব থাকে চালকদের। এলাকাবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, গত দুই বছরে মহাসড়ক পারাপার হতে গিয়ে ২ শিক্ষার্থীসহ ৭ পথচারী নিহত হয়েছে। তাই এ এলাকায় একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের দাবি তুলেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও সপ্তাহে দুইদিন স্থায়ী হাটের সাধারণ মানুষ রাস্তা পরাপার হয় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। তাছাড়া বিদ্যালয়গুলোর বিপরীতে রয়েছে মডেল মসজিদ। স্কুলের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মুসল্লিদের মহাসড়ক পার হয়ে মজদিদে যেতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। বিদ্যালয় ছুটির পর একজন দপ্তরি সড়ক পার হতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করলেও তা পর্যাপ্ত নয়, একটু অমনোযোগী বা অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।এই বিষয়ে স্কুলের দপ্তরির দায়িত্বে থাকা সাকিব বলেন, স্কুল ছুটির পর আমি শিক্ষার্থীদের রাস্তা পার করে দেই কিন্তু অনেক সময় আমার পক্ষে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা আসার সময় তো আর আমি একজন একজন করে পার করতে পারি না তাই সবসময় দুর্ঘটনার একটা ভীতি থেকে যায়।
সাদেক মাস্তান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জাফর আহম্মদ বলেন, আমাদের প্রায় ৯শ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭০ শতাংশ রাস্তার পশ্চিম পাশে থেকে আসা–যাওয়া করে এদের নিরাপওার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন অতি জরুরী। ২০২১ সালে আসমা ও মোরশেদ নামের দুই শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। আরো অনেকে আহত হয়েছে। এতো সর্তকতার মধ্যেও দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। সাদেক মাস্তান উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মছিউদ্দৌজা বলেন, নিরাপদ রাস্তা পারাপারে একটি ফুটওভার ব্রিজ খুব দরকার। রাস্তা পার হওয়ার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে চায়না। শিক্ষার্থীরা লাল পতাকা দেখিয়ে রাস্তা পারাপার করেন। এতে পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। এমন দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিভাবক মো. সেলিম বলেন, প্রতিদিন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা অনেক দুচিন্তায় ভুগী। ছোট ছোট বাচ্চা, ঢাকা– চট্টগ্রামের মতো মহাসড়ক পার হয়ে স্কুলে যাওয়া–আসা খুবই অনিরাপদ। পৌরসভার ৬নং ওরার্ড কাউন্সিল দিদারুল আলম এ্যাপেলো বলেন, রাস্তার উত্তর পাশে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পশ্চিম পাশে মুরাদপুরের অসংখ্য জনসাধারণের পারাপার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কিছুদিন পরপর দুর্ঘটনা ঘটে। ফুটওভার ব্রিজ আমাদের গণদাবি, জনপ্রতিনিধি হিসাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীঘ্রই একটি ফুটওভার ব্রিজের দাবি জানাচ্ছি। এই বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে ফুটওভার ব্রিজ প্রয়োজন। তবে ব্রিজ স্থাপনের বিষয়টি সম্পূর্ণ সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এখানে উপজেলা প্রশাসনের কিছু করার নেই। সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রামের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) রোকন উদ্দীন খালেদ বলেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর বরাবর স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে ডিও লেটার দিলে এক্ষেত্রে মন্ত্রী সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজন অনুসারে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ইতিমধ্যে আমরা এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে সীতাকুণ্ডের কয়েকটির বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষের জন্য ফুটওভারব্রিজ নির্মান করেছি।