সীতাকুণ্ডে শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করানোর অভিযোগ, তদন্ত শুরু

| শনিবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী হাজী তোবারক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আচার্য্যকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করানোর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। কান্তি লাল অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘চাপে‘ জোর করে পদত্যাগপত্রে তার সই নেওয়া হয়। পরে তিনি বিচার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন।

গতকাল শুক্রবার কান্তি লাল বলেন, দুর্নীতি নয়, স্কুল পরিচালনায় অ্যাডহক কমিটি করা নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। মাইনরিটি হওয়ায় তারা আমার এ অবস্থা করতে পেরেছে। খবর বিডিনিউজের।

ঘটনার বর্ণনায় কান্তি লাল বলেন, বুধবার কয়েকশ লোক মিছিল নিয়ে স্কুলে এসে আমার পদত্যাগ দাবি করে। তারা ককটেল ফাটিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। এরপর জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেয় এবং গাড়িতে তুলে আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সেদিন স্কুল কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় বিএনপির সভাপতি নুরুল আনোয়ারও তখন ছিলেন এবং তার লোকজনই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার এক ছাত্রও তাদের হামলায় আহত হন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আনোয়ার বলেন, ওই শিক্ষক ও তার লোকজন ১৭ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এ স্কুল লুটেপুটে খাচ্ছে। সেজন্য এলাকাবাসী উনার পদত্যাগ চাইছে। ভাটিয়ারী এলাকার লোকজন সেখানে মিছিল নিয়ে গিয়েছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে গিয়েছিলাম। কেউ জোর করে পদত্যাগ করায়নি দাবি করে তিনি বলেন, উনি জনগণের চাপে পদত্যাগ করেছেন। ওনার দুর্নীতির বিচার করতে হবে।

কান্তি লাল আচার্য্য বলেন, গত ৬ এপ্রিল স্কুলের অ্যাডহক কমিটি বোর্ড থেকে অনুমোদন নেয়। কমিটির সভাপতি করা হয় মহিউদ্দিন আহমেদকে। এটা নিয়ে স্থানীয় বিএনপির লোকজনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া হয়। গত পহেলা বৈশাখে স্কুলের অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনও অবগত। স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি ওই স্কুল এবং ওই শিক্ষকের সরাসরি ছাত্র। কী কারণে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমার বোধগম্য নয়। তারা তাণ্ডব চালিয়ে এসব করেছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ওই শিক্ষক আমাকে অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, কোন শিক্ষককে এভাবে যেন হ্যারাস করে পদত্যাগ করানো না হয়, সে ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা আছে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা প্রয়োজনে তদন্ত করে বিচার হবে। তিনি বলেন, ওই স্কুলের ঘটনা জেনেছি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ ঘটনায় আইনগতভাবে যেটা করা দরকার, সেটা করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে পুকুরে ডুবে দুই রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপূর্বাঞ্চলে রেলের ৫শ একর জমি বছরের পর বছর অবৈধ দখলে