টানা বৃষ্টিতে রোপা আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার কৃষকরা। চলতি বছরের মে–জুলাই কয়েক দফা বৃষ্টিতে ইরি–বোরো মৌসুমে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বোরো চাষিরা। সেই ক্ষতিকে পুষিয়ে নিতে এবার আগাম রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করেন কৃষকরা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সে সব বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোন কোন কৃষক একাধিকবার আমন বীজ বপন করলেও তা নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আমন চাষকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হওয়ার কথা। যার কারণে কৃষকরা প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি করে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে আমনের বীজতলা ডুবে যাওয়ায় অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
সৈয়দপুর, মুরাদপুর ও বারৈয়াঢালা ইউনিয়নে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে বেশিরভাগ ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে বীজতলা তৈরির সময় না থাকায় জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সৈয়দপুর ইউনিয়নের শেখের হাট এলাকার কৃষক নুর আবছার বলেন, তিনবার বীজতলা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু বর্ষার পানিতে ডুবে গেছে। আমাদের ফসলি জমি মনে হয় এবার পড়ে থাকবে। সৈয়দপুর ইউনিয়নের মধ্যে প্রতিবছর বর্ষায় একই চিত্র থাকে। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে সৈয়দপুর ইউনিয়নের উপকূল এলাকার দুটি স্লুইস গেই পলি জমে অকেজো হয়ে রয়েছে। যার কারণে পানি প্রবাহ সঠিকভাবে নিষ্কাশন হতে না পেরে এলাকার চাষের জমিতে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, স্লুইসগেট যতদিন ঠিক হবে না ততদিন এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মুরাদপুর ইউনিয়নের কৃষক মেজবাহ উদ্দিন জানায়, ১০ বিঘা জমিতে চারা লাগানোর জন্য বীজতলায় বীজ বপন করেছিলাম। যেসব চারা গজিয়েছিল, টানা বৃষ্টিতে সেসব চারা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি না কমলে নতুন করে বীজতলা তৈরি করা সম্ভব না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে চাষ করার জন্য প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে বীজতলাগুলো ডুবে যাওয়ায় আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও একেবারে পচে গেছে। যার কারণে অনেক আমন চাষের জমি অনাবাদি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।