আধ ঘন্টার ব্যবধানে পরপর চারটি ইনজেকশন প্রয়োগের কারণে সীতাকুণ্ডে নাজমা বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আক্তার হোসেন (৬৫) ও ইদ্রিস চৌধুরীকে (৬৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা দুই জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আক্তার হোসেন ওই নারীর প্রাক্তন স্বামী ও ইদ্রিস চৌধুরী পল্লী চিকিৎসক বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার দশদনা গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের ডাবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ হাজীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
গ্রেপ্তার অপরজন ইদ্রিস চৌধুরীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার করুয়া গ্রামের। তিনি আগ্রাবাদ বাদামতল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ নাজমা বেগম চিকিৎসা সেবা নিতে গতকাল শনিবার সকালে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় বোনের বাড়িতে আসেন। দুপুরে তার প্রাক্তন স্বামী আক্তার হোসেন তার সঙ্গে ইদ্রিসকে নিয়ে নাজমার বোনের বাড়িতে আসেন। সে ইদ্রিসকে পল্লী চিকিৎসক হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ইদ্রিস নাজমার শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করেন।
আধ ঘন্টার ব্যবধানে পরপর চারটি ইনজেকশন দিলে নাজমা ছটফট করতে থাকেন এবং একটু পর সংজ্ঞাহীন হয়ে মারা যান। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা আক্তার ও ইদ্রিসকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন জানান, তার স্ত্রী গত ২ ফেব্রুয়ারি ব্রেন স্ট্রোক করেন। এতে তার শরীরের ডান পাশ প্যারালাইজড (অবশ) হয়ে পড়েন। স্ট্রোকের পর নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর চিকিৎসক তাকে ছাড়পত্র দেন। পরে সেবার জন্য তাকে সীতাকুণ্ড ফৌজদারহাট এলাকায় বোনের বাড়িতে পাঠান। তার স্ত্রীকে চিকিৎসার নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করেন তিনি। তিনি চান হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে রোববার সকালে নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আক্তার হোসেন ও ইদ্রিত চৌধুরী ছাড়াও আক্তার হোসেনের এক বড় ভাইকে আসামি করা হয়েছে। আটক দু’জনকে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত নারীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস চৌধুরী নিজেকে পল্লী চিকিৎসক দাবি করলেও কোন ধরনের সনদ দেখাতে পারেননি। তবে সে চার দশকেরও অধিক সময় ধরে আগ্রাবাদ এলাকায় ফার্মেসি ব্যবসা করছেন বলে দাবি করেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে নাজমার শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করেছিলেন তিনি।