সীতাকুণ্ডে বিষমুক্ত সবজি চাষে সফলতা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | বুধবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ

কৃষিতে আধুনিকায়নের প্রতিফলন ঘটাতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন সীতাকুণ্ডের টেরিয়াইল, ধর্মপুর, বারৈয়াঢালা ও লালানগরের কৃষকরা। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ছাড়া সবজি আবাদ করছেন তারা; প্রথম পর্যায়ে দারুণ সফলতা পেয়েছেন।

উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ সবজি উৎপাদনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আইপিএম পদ্ধতির এ কার্যক্রমে পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলার টেরিয়াইল, ধর্মপুর, বারৈয়াঢালা ও লালানগর এলাকায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে কৃষকরা। এ কার্যক্রমে সফলতা অর্জনের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহর নেতৃতে একটি টিম গঠন করা হয়। এ টিমে কাজ করছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম, মো. শাহ আলম ও পিপাস কান্তি চৌধুরী। আইপিএম পদ্ধতিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা যায়। এতে করে বিষ ও কীটনাশকের ব্যবহারও কমেছে এবং নিরাপদ সবজি সংগ্রহ করতে পেরে খুশি ভোক্তারাও। বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে রোগ সহনশীল আধুনিক জাত ব্যবহারসহ আধুনিক পদ্ধতিতে যেমন মালচিং পদ্ধতি, নেট হাউজের মাধ্যমে সবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। রোগ ও পোকামাকড় দমনের জন্য বিভিন্ন

যান্ত্রিক পদ্ধতি যেমন হলুদ, নীল ও সাদা আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ফেরোমন ফাঁদও পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে জমিতে। আর এসব পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন না হলে বিভিন্ন ধরনের জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। তারপরেও রোগ বালাই দমন না হলে অনুমোদিত মাত্রায় কেমিক্যাল পেস্টিসাইড ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া কেমিক্যাল পেস্টিসাইড ব্যবহার করলে কৃষকদের পোস্ট হারভেস্ট ইন্টারভেল মেনে চলার জন্যও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল ব্লকের কৃষক মো. জামাল উল্লাহ বলেন, চলতি বছরে ১৮ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। আর বাজারে ৩০ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারীতে ফুলকপি বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, রোগ ও পোকামাকড় দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদসহ আইপিএম পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে এবার পোকার আক্রমণ দেখা যায়নি। ফলে সবজি উৎপাদনে আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি লাভবান হয়েছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ জানান, পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ৫০০ কৃষককে হাতে কলমে আইপিএম পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন শেখানো হচ্ছে। বর্তমানে রবি মৌসুমে সীতাকুণ্ডে ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হয়েছে। তারমধ্যে শুধু বারৈয়াাঢালা আইপিএম মডেল ইউনিয়নে ১০০ একর জমিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন হবে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধশেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বিজয় মেলা