সীতাকুণ্ডে দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ সংস্কারে উদ্যোগ নেই

ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৬ জুন, ২০২৫ at ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও বাঁশবাড়িয়া এলাকায় আর আর টেক্সটাইল মিলস্‌ এর সামনে দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়।

জানা গেছে, এই ফুট ওভারব্রিজটি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এরপর থেকে আর আর টেক্সটাইল মিলস্‌ উচ্চ বিদ্যালয় এবং একই জায়গায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা খুবই নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে চলাচল করেছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৬ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুট ওভারব্রিজে ধাক্কা দিলে ব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার দিন চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দুটি সড়ক পার হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়। স্থানীয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার, দীয়া রানী দাস, জুবাইদা আক্তার, ইনসাফুল হক, জান্নাতসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে তারা নিরাপদে চলাচল করেছিল। কিন্তু ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশটি ভেঙে পড়ায় কেউ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। তাই ঝুঁকি নিয়ে দুটি সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয় যেতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করে তাদের ঝুঁকিমুক্ত করার।

অভিভাবকরা জানান, ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয় পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই তাদের। ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয় থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত অস্থিরতায় থাকতে হয় অসংখ্য অভিভাবকদের।

বাঁশবাড়িয়া আর আর টেঙটাইল মিলস্‌ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারহানা রহমান বলেন, গত ১৬ মে ফুট ওভারব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি ঘটনার দিন চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ পরিদপ্তর বরাবরে চিঠির মাধ্যমে তাদের অবহিত করেছি। এরপর বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিনের কাছেও অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু গত এক মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। প্রতিটি মুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হচ্ছে। যার ফলে অভিভাবকসহ আমাদের সবাইকে আতঙ্কে থাকতে হয় এখন।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক বার কথা হয়েছে। তারা বলেছেন ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করে দিবেন।

সওজ’র উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে এসেছি। লোক ঠিক করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করা হবে বলে আশা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবানে ইউপিডিএফের ৬ সদস্য আটক
পরবর্তী নিবন্ধরঙচঙে লেবেল, ভেতরে নিম্নমানের তেলের মিশেল