সীতাকুণ্ডে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি নিহত ১

এক মাসে ১৩ ডাকাতি

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির(৫৫) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মান্দারীটোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এর আগে গভীর রাতে পার্শ্ববর্তী মুরাদপুর ইউনিয়নের দুই বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত আনুমানিক দুইটার দিকে উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নে হানা দেয় ২০-২৫ জনের ডাকাত দল। তারা প্রফেসর আবুল কালামের বাড়িসহ দুই বাড়িতে হানা দিয়ে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয়। মুরাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহেদ হোসেন নিজামী বাবু জানান, এ সময় গ্রামবাসী ঘটনা টের পেয়ে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মান্দারীটোলা গ্রামে প্রবেশ করে সেখানেও ডাকাতির চেষ্টা করে। বাড়বকুণ্ড মান্দারীটোলার ইউপি সদস্য মো. জামাল উদ্দিন জানান, প্রতিরাতে এলাকায় ডাকাত হানা দিচ্ছিল, তাই মানুষ ক্ষিপ্ত ছিল। রোববার দিবাগত রাত চারটার দিকে পাহারায় থাকা লোকজন মান্দারীটোলার দিকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে দৌড়ে আসতে দেখেন। পরে মসজিদের মাইকে ডাকাত ডাকাত বলে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে জড়ো হতে বলেন। স্থানীয় লোকজন ওই ব্যক্তিকে ধরে পিটুনি দেন। পরে পুলিশ এসে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রীতম চক্রবর্তী বলেন, ওই ব্যক্তিকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার দুটি কান কেটে দেওয়া হয়েছে। মাথা, মুখসহ পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ কর্মকর্তা(তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ভোর রাতে মান্দারীটোলা গ্রামের বাসিন্দারা ডাকাত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করে গনপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। ওই ব্যক্তি এলাকার না হওয়ায় ডাকাত দলের সদস্য মনে করে এলাকাবাসী গনপিটুনি দেয়। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত এক মাসে সীতাকুণ্ডে ১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে তিনটি ঘটনায় খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে সবকিছু লুট করে নেয় ডাকাতেরা। এতে ওই তিন পরিবারের শিশুসহ অসুস্থ ৩০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ডাকাতের হাত থেকে বাঁচতে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে পাহারা জোরদার করেন। সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, মুরাদপুর ও সৈয়দপুরে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় যুবকেরা। এরই মধ্যে গণপিটুনির এই ঘটনা ঘটল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার ভেন্যুতে চলছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধমাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ায় খুন