সীতাকুণ্ডে জেলেদের পিটিয়ে ইলিশ ও নগদ টাকা লুট

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | রবিবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে ইলিশ মাছ লুটে বাধা দেয়ায় দুই জেলের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুষ্কৃতিকারীরা পিকআপে থাকা প্রায় ১০ জন জেলের ৬ মণ ইলিশ মাছ ও দশ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পৃথক হামলায় বাবলু জলদাস ও কমল জলদাস গুরুতর আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সোনাইছড়ি ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী জেলেরা সীতাকুণ্ড থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। এছাড়া সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে পাঠানো এক পত্রে ভুক্তভোগী জেলেরা জানান, হামলার ঘটনার পর থেকে জেলেপল্লীর বাসিন্দাদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। হামলার পর থেকে দুষ্কৃতিকারীদের অব্যাহত হুমকির কারণে সাগরে যেতে পারছেন না তারা। তবে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর থেকে হামলায় জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

সোনাইছড়ি চেয়ারম্যান পাড়ার আহত বাবলু জলদাস বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকালে সাগর থেকে ধরা ইলিশ মাছসহ বেশ কয়েকদিনের বরফে জমানো ইলিশ প্রিকাপ ভর্তি করে আমিসহ প্রায় দশজন জেলে সীতাকুণ্ড বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হই। গাড়ি চেয়ারম্যান পাড়া এলাকা অতিক্রমকালে মো. অভি, মো. আকবর, মো. সাজ্জাদ, মো. বেলাল ও রাহাতসহ বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী পিকআপের গতিরোধ করে। এ সময় তারা পিকআপে থাকা ইলিশ মাছগুলো তাদের দিয়ে যেতে বলে এবং গাড়ির চালককে মেরে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। দুষ্কৃতিকারীদের মাছ দিতে অসম্মতি জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জেলেদের উপর শারীরিক আঘাত করেন। তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতে আমার মাথার ডানপাশ ফেটে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ সময় জেলেরা পালিয়ে গেলে দুষ্কৃতিকারীরা পিকআপে থাকা ৬ মণ ইলিশ মাছ লুট করে নেয় এবং জেলেদের কাছ থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।

অন্য ভুক্তভোগী বাঁশবাড়িয়া বোয়ালিয়াকূল এলাকার জেলে কমল জলদাস জানান, ইলিশ মৌসুম শুরুর পর থেকে বিনামূল্যে মাছ দিতে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছিলেন লিংকন নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতিকারী। তার দাবি অনুযায়ী মাছ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শুক্রবার রাতে তাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে মারধর করে। এক পর্যায়ে কমল সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। এই ঘটনায় তিনি গতকাল শনিবার সীতাকুণ্ড থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, ইলিশ মৌসুম শুরুর পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জেলেদের উপর হামলা ও মাছ লুট করে নেয়ার কয়েকটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ জানান, ইলিশ মাছ লুটে নিতে জেলের উপর পৃথক দুটি হামলার বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে গতকাল শনিবার সকাল থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, জেলেদের ইলিশ মাছ লুট ও তাদের উপর হামলার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানার ওসি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সাথে কথা কথা বলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধট্রেনের ধাক্কায় তিন পথশিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধরাশিয়ার মুদ্রায় বাণিজ্যের ৩০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ