ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চলন্ত অবস্থায় একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সীতাকুণ্ড উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নুরমার দীঘির পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দ্রুত সময়ে গাড়ি থেকে নেমে যেতে পারায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ৩৬ যাত্রী। অন্যদিকে গতকাল বিকেল ৫টায় উপজেলার দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পুকুরঘাট এলাকায় শান্তি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে কেউ হতাহত নাহলেও বাসটি সম্পূর্ণ অঙ্গার হয়ে যায়।
সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডে ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চলন্ত অবস্থায় একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাসে হঠাৎ আগুন লাগলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঠিক সময়ে বাস থামায় ও যাত্রীরা নেমে যেতে পারায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ৩৬ যাত্রী। তবে বাস থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে নারী-পুরুষসহ ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নুরমার দীঘির পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে বাসে অগ্নিকাণ্ডের পর চট্টগ্রামমুখী মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চট্টগ্রামমুখী সড়কে দূর-পাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়ক থেকে বাসটি সরিয়ে নিলে প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রংপুর থেকে ছেড়ে আসা নিউ এডিশন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি মহাসড়কের নুরমার দীঘির পাড় এলাকা অতিক্রমকালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এ সময় বাসটি মহাসড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে গেলে ভেতরে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে নেমে যায়। এ সময় স্থানীয়দের পাশাপাশি সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ও কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সোহেল বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছিল। এতে গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়ানো গেছে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভান। সময়মতো আগুন নেভানো না গেলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারত।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দুলাল বলেন, যাত্রীবাহী বাসটিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগুন লেগে যায়। তারা স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আধঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, যাত্রীরা রক্ষা পেলেও আগুন লাগা ওই বাসের নিচের বঙে ৯টি ছাগল ছিল। আগুনে দুটি ছাগলের কিছুটা পুড়ে গেছে। অন্যগুলো সুস্থ আছে। ছাগলগুলো থানা হেফাজতে রয়েছে।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে শান্তি পরিবহনের একটি বাস। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় উপজেলার দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পুকুরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
খাগড়াছড়ি শান্তি পরিবহনের অফিস সহকারী সুমন দেবনাথ জানান, শান্তি পরিবহন বাবুছড়া বাজার থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী গাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে কোনো যাত্রী হতাহত না হলেও ৩০ লাখ টাকার গাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
দীঘিনালা ইউপি চেয়ারম্যান প্রজ্ঞান জ্যোতি চাকমা জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা বলতে পারছি না।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, বাসে আগুন লাগার বিষয়য়টি কেউ জানায়নি।