ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। পাশাপাশি শিপ ইয়ার্ডের দুর্ঘটনায়ও হতাহতের শিকার হচ্ছেন অনেকে। দুর্ঘটনা ঘটলেই আহত ব্যক্তিকে নিয়ে স্বজন বা উদ্ধারকারীরা প্রথমেই ছুটে যান সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
কিন্তু সেখানে এসব রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো তেমন কোনো জরুরি ব্যবস্থা নেই। আহতদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পথেই মারা যান অনেক রোগী। তাই সীতাকুণ্ডে ট্রমা সেন্টার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুসারে, সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রতিদিন গড়ে একটি করে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। গত এক বছরে ১৮৫টি দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত ও ২৬০ জন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত রোগীদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
কিন্তু হাসপাতালে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত ট্রমা সেন্টার না থাকায় তারা চিকিৎসা বঞ্চিত হন। হাসপাতালের চিকিৎসকের আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে আহত রোগীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আহত রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার স্বার্থে সীতাকুণ্ডে পূর্ণাঙ্গ ট্রমা সেন্টার চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জাহাজ ভাঙা শিল্পে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একাধিক স্থান দুর্ঘটনা প্রবণ হওয়ার পরও এ অঞ্চলে এখনও একটি পূর্ণাঙ্গ ট্রমা সেন্টার প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় আক্ষেপ সীতাকুণ্ডবাসীর।
বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার্স ইনচার্জ মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ট্রমা সেন্টার চালু করা জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, উপজেলার ওপর দিয়ে চলে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই মহাসড়কে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু এখানে কোনো ট্রমা সেন্টার নেই। একটি ট্রমা সেন্টার চালু করা হলে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দারা উপকৃত হতেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিতে ট্রমা সেন্টার জরুরি। হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।