সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচন আজ। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। দলীয়ভাবে নির্বাচন করার ফলে শুরু থেকেই জমে উঠেছে এই নির্বাচন। ভোটারদের মধ্যে রয়েছে উৎসবের আমেজ। সব দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় প্রকৃত ভোট উৎসবের আমেজ পাচ্ছেন ভোটাররা। সীতাকুণ্ড ছাড়াও দেশের আরো ২৩ পৌরসভায় আজ সোমবার ভোটের লড়াই চলবে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নয়টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩৪,৮১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৭,৮২৭ জন ও মহিলা ভোটার ১৬,৯৮৬ জন। ১৭টি কেন্দ্র ও ৯৮টি বুথ রয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, ৩টি সংরক্ষিত নারী আসনে ১২ জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৬৩ জন কাউন্সিল প্রার্থী প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারই প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড পৌরসভার সব ক’টি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ পৌর নির্বাচন হয়েছিল।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে বর্তমান মেয়র বদিউল আলম, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মো. আবুল মুনছুর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল প্রতীকে জহিরুল ইসলাম।
প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বিএনপির সমর্থিত একক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর ফলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রচারণা চলাকালে প্রার্থীদের মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে আজ ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীদের প্রভাব এবং ভোটারদের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে কেন্দ্রে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন ভোটাররা। সীতাকুণ্ড পৌর নির্বাচনে ১৭ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৯ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। থাকবে ২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৯শ সদস্য।
এদিকে, গতকাল দুপুর থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অফিস থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে ছোট ট্রাকে করে ভোটার সরঞ্জাম নিয়ে যান নির্বাচন কর্মকর্তারা। সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ভোট কেন্দ্রে অবস্থান নেন।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবুল মুনছুর অভিযোগ করেন, এলাকায় বহিরাগতরা অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তারপরও বিএনপি শেষ পর্যন্ত থাকবে। তিনি সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান।
বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুইঁয়া বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে। কোনো বাধা ছাড়াই বিএনপির প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে পরাজয় ও ভরাডুবির ভয়ে বিএনপি মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, কেবল তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনে গোলযোগ সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ইভিএম ভোটে কারচুপি করার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক থাকবেন। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে অর্ধশতাধিক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মী থাকবেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।