সীতাকুণ্ডে আইআইইউসি শিক্ষার্থীদের রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধ

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৬ জুলাই, ২০২৪ at ৩:০৭ অপরাহ্ণ

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে কুমিরাস্থ আইআইইউসির শিক্ষার্থীরা রেলপথ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় তিন ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ থাকে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে কুমিরা রেলওয়ে স্টেশনে আন্দোলন শুরু করে তারা। এতে শত শত শিক্ষার্থী যোগদান করে। সেখানে তারা কোটাবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। এসময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা পড়ে।

খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেয়। প্রায় ৩০ মিনিট অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীরা রেলপথ থেকে সড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়।

আইআইইউসি গেটের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এলাকা উত্তাল হয়ে উঠে।

এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এদিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নেয়। তবে ব্যাপক পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতির কারণে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবরোধকারিরা প্রায় তিনঘন্টা অবস্থান করে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কঠোর পদক্ষেপ নেয়ায় মহাসড়ক থেকে সড়ে পড়ে। এর পরে ধীরে ধীরে যান চলাচল শুরু করে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, কুমিরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে দুইটি ট্রেন আটকা পড়ে।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র ঘোষ জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনে নামা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুরুতেই রেলপথ অবরোধ করেন। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয় গেট সংলগ্ন চট্টগ্রামমুখী সড়ক অবরোধ করেন। এতে চট্টগ্রামমমুখী সড়কে আটকা পড়ে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন। মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী সড়ক অবরোধের ঘন্টাখানিক পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঢাকামুখি সড়কে অবস্থান নেয়।

এতে ঢাকামুখী সড়কে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে দুপুর দেড়টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করলে তাঁরা ঢাকামুখী সড়ক থেকে সরে গেছে।

এতে ঢাকামুখি সড়কে যানবাহন চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। দুপুর দেড়টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষক সহ তারা পুনরায় বুঝিয়ে শান্ত করলে তারা চট্টগ্রামমমুখী সড়ক থেকে সরে যায়। এরপর ধীরে ধীরে চট্টগ্রামমুখী সড়কেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে নামা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এ সময় কিছু উত্তেজিত মহাসড়কের টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। যার ফলে মহাসড়কে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। তারা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

বিক্ষোভের তিন ঘন্টা পর ঢাকামুখি সড়ক থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সড়িয়ে দিলে ঢাকামুখি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনে নামা আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অবরোধের তিন ঘন্টা পর তারা মহাসড়ক থেকে সরে যায়। ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকামুখি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি আটকা পড়া দূরপাল্লার শত শত যানবাহন তাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিক্ষোভে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে ৫ ইউনিয়নের ১৪ খালের পানি নদীতে গড়ায় না!
পরবর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে নিহত ১