চট্টগ্রাম থেকে দেশের ৩৪টি নৌ রুটে পণ্য পরিবহনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সিরিয়াল প্রথা। বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন সেলের (বিডব্লিউটিসিসি) প্লাটফর্ম থেকেই সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল করবে। আজ বেলা ১১টায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মাকসুদ আলম চট্টগ্রামে এসে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। নগরীর আগ্রাবাদস্থ সাবেক ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল বা ডব্লিউটিসির অফিস থেকে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে চলাচলকারী লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠন যথা বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাং (আইভোয়াক) এর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম পরিচালিত হতো। দেড় হাজারেরও বেশি লাইটারেজ জাহাজ সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে পণ্য পরিবহন করলেও নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে ২০২৩ সালে ডব্লিউটিসি ভেঙে যায়। জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠনের বিরোধের মুখে বন্ধ হয়ে যায় সিরিয়াল প্রথা। গত এক বছর ধরে জাহাজ মালিক এবং আমদানিকারক জাহাজ মালিকরা দরকষাকষির মাধ্যমে ভাড়া নির্ধারণ করতেন। এতে তুলনামূলক কম ভাড়ায় আমদানিকারকেরা পণ্য পরিবহনের সুযোগ পান। কিন্তু সাধারণ জাহাজ মালিকদের অনেকেই চরম সংকটে পড়েন। বহু জাহাজ মালিকই খরচ যোগাতে না পেরে জাহাজ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেন। জাহাজ স্ক্র্যাপ করে ফেলেন অনেকে। শ্রমিকদের বেতন ভাতার যোগান আটকা পড়তে থাকে বিভিন্ন জাহাজে।
চরম এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নৌপরিবহন অধিদপ্তর বিষয়টিকে একটি শৃংখলার মধ্যে আনার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে। অবশেষে সরকার একটি নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপনের আওতায় জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হয় বিডব্লিওটিসিসি। এই সেল থেকে সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে জাহাজ চলাচল করার বাধ্যবাধকতাও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আজ সকাল থেকে এই সংগঠনের আওতায় সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে জাহাজ চলাচল শুরু করবে। ইতোমধ্যে লাইটারেজ জাহাজগুলো সিরিয়াল প্রথায় নিজেদের তালিকাভুক্ত করেছে।
নতুন করে সিরিয়াল প্রথা শুরু করায় ভাড়ার ব্যাপারটি বেশ আলোচিত হচ্ছে। গতকালও একাধিক আমদানিকারক এই ভাড়ার ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল সংস্থার কনভেনর সাঈদ আহমেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা তিন সংগঠনই বসেছি। ভাড়ার ব্যাপারটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমরা সকল জাহাজ মালিক এবং দেশের আমদানিকারকদের স্বার্থ বিবেচনা করে একটি যৌক্তিক ভাড়া হার নির্ধারণের চেষ্টা করছি। বিষয়টি নিয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয় চট্টগ্রামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ঘোষণা দেবেন বলেও তিনি জানান। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, দেশের আমদানি খাতকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না। আমরা সবাই মিলে সেক্টরটিকে রক্ষা করবো এবং দেশটিকে সুন্দর করতে কাজ করবো।
আইভোয়াকের মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা বসে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। যৌক্তিক ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে বলেই আশা করছি।