সিরিয়ার কৌশলগত অস্ত্রের মজুদ ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের

হামলায় নৌবহর ধ্বংস

| বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

সিরিয়াজুড়ে দুদিনে চালানো প্রায় ৪৮০টি বিমান হামলায় দেশটির কৌশলগত অস্ত্র মজুদের অধিকাংশই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি শত্রুমুক্ত প্রতিরক্ষা জোন বসানো, যা স্থায়ী সেনা উপস্থিতি ছাড়াই বলবৎ থাকবে।

রোববার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিরিয়াজুড়ে হামলার ঢেউ বইয়ে দেয়। সিরিয়ার বিমান বিধ্বংসী ব্যাটারি, সামরিক বিমানক্ষেত্র, অস্ত্র উৎপাদন কারখানা, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয় বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

এর পাশাপাশি সোমবার রাতে জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়ার আল বায়দা বন্দর ও লাতাকিয়া বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোতে আঘাত হানে ইসরায়েল। এ সময় ওই দুই বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ নোঙর করা ছিল।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়াজুড়ে চালানো এসব হামলার লক্ষ্য ছিল দেশটির কৌশলগত অস্ত্র ও সামরিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করা, যেন আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীরা সেগুলো ব্যবহার করতে না পারে। এই বিদ্রোহীদের কিছু অংশের উৎপত্তি আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা থেকে হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার উদ্দেশ্য নেই তাদের, কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা করা দরকার তাই করছেন তারা। তিনি বলেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর রেখে যাওয়া কৌশলগত সামরিক সামর্থ্যে বোমাবর্ষণ করতে বিমান বাহিনীকে অনুমোদন দিয়েছি আমি, যেন সেগুলো জিহাদিদের হাতে গিয়ে না পড়ে।

রোববার আসাদ বিমানযোগে পালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা ১৯৭৩ সালের আরবইসরায়েল যুদ্ধের পর সিরিয়ার ভেতরে তৈরি করা অসামরিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। তারা সিরিয়ার কৌশলগভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্বত মাউন্ট হেরমনে সিরিয়ার একটি সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। মাউন্ট হেরমন থেকে পুরো দামেস্ক দেখা যায়। ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদভ শোশানি দাবি করেছেন, তাদের সেনারা ইসরায়েলসিরিয়ার মধ্যবর্তী বাফার জোনেই আছে, তবে তারা এর কাছাকাছি কয়েকটি অতিরিক্ত পয়েন্টেও অবস্থান নিয়েছে।

সিরিয়ার এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার আরও ভেতরে ঢুকে পড়ে কাতানা শহরে উপস্থিত হয়েছে, যা বাফার জোন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে এবং দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে অল্প গাড়ি দূরত্বে অবস্থিত।

কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার অনেকটা ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলে যে অভিযোগ এসেছে শোশানি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসরায়েলি সেনারা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরে পুলিশ
পরবর্তী নিবন্ধলেডিস ক্লাবে নীলকলমের সাহিত্য সভা