সারাজীবন ইট–কাঠ আর লোহার গ্রিলে বন্দী নাগরিক জীবন অবমুক্তি খোঁজে, আবদ্ধতার আগল ভেঙে দু’হাত খুলে আপন করে নিতে চায় প্রকৃতির বিশালতাকে। সেজন্যই হয়তো মানুষ যখন কর্ম ব্যস্ততায় হাঁপিয়ে উঠে, ছুটে যায় সেই উদার প্রকৃতির কাছে। কিন্তু ছুটিতে তো আর সারাজীবন থাকা যায় না। তাকে ফিরে আসতে হয় সেই নাগরিক পরিমণ্ডলে, ছকে সাজানো বন্দীদশায়।
ফলে সে স্বপ্ন দেখে জীবনের সকল প্রয়োজন, কর্ম ও জীবিকা, সামাজিকতা ও আনুষ্ঠানিকতা, নিরাপত্তা ও সাবলীলতা কোনো কিছুকেই বাদ না দিয়ে, যদি প্রকৃতির কোলে, তার বৈচিত্র্যে, নির্মলতায়, ছন্দময়তায় জীবন কাটিয়ে দেয়া যেত!
ধরুন, শান বাঁধানো বাগান পথে আনমনে হাঁটছেন, বুঝতেই পারছেন না কখন কামিনী বা বাগান বিলাস, জবা, আইভি কিংবা পর্তুলিকারা আপনার সাথে কথা বলা শুরু করে দিয়েছে। অবাক হয়ে দেখবেন, জীবন অনেক বেশি বাগ্ময়, অনেক বেশি প্রাণবন্ত। গাছের সারিতে একটু মনোযোগ নিয়ে তাকালেই দেখবেন, রঙের কত বিস্ময়কর বৈচিত্র্য। ভোরের অরুণিমা, সাঁঝের গোধুলী আবীর, খোলা আকাশের ব্যাপ্তি, বিশুদ্ধ বাতাসের মদির ঘ্রাণ আর ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা–তাল–লয়, জীবনকে ছুঁয়ে যায়, অর্থপূর্ণ করে তোলে।
কিন্তু নগরে কি এরকম মুক্তির স্বাদ পাওয়া সম্ভব?
হ্যাঁ, সম্ভব। এরকম অবমুক্ত জীবনযাত্রার সন্ধান পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম নগরীর দেবপাহাড় এলাকায়। সিপিডিএল এখানে সৃষ্টি করেছে এক মায়াময় পরিবেশ এবং প্রতিবেশ। সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া এরকমই নান্দনিক সৃজন।
সকালে কর্ণফুলীর পুব হতে লাল টকটকে সূর্যটা যখন নতুন একটা দিনের আগমনী ঘোষণা করে, গার্ডেনিয়ার জানালার ফাঁক গলে আপনাকে আলতো করে ছুঁয়ে যায়, বুঝবেন পৃথিবী কত উদার কত তাৎপর্যময়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে জয় পাহাড়ের আড়ালে নামতে নামতে সূর্য আরেকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়, কাল সকালে আবার এসে জীবনের সূচনা ঘটানোর। ঠিক দখিনে মহসিন কলেজ লাগোয়া যে বনপাহাড়, সে যেন এক প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র, সৃষ্টির আদিকাল থেকে এখানে সব সাজিয়ে বসে আছে গার্ডেনিয়ার জন্য। কতরকম পাখি, তক্ষক, কাঠবিড়ালি নেচে গেয়ে মাতিয়ে রাখে, দেখার চোখ থাকলে আর একটা মানবিক মন থাকলে বোঝা যাবে কি অপার শান্তি যে আছে এই শাল তমাল সেগুন ছাতিমের বনে। নগরীর সবুজ ঐতিহ্যের ধারক দেবপাহাড়ে ছায়া শীতল গেইটেড কমিউনিটি সুলতানা গার্ডেনিয়া যেন একটি অপার্থিব অবসর কেন্দ্র, বাড়ি নয়, যেন এক নৈসর্গিক রিসোর্ট।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়ার প্রথম চমকটা পাওয়া যায় কলেজ রোড থেকে দেবপাহাড়ে প্রবেশপথে। দৃষ্টিনন্দন একটি গেট দিয়ে সিপিডিএল সম্পূর্ণ এলাকাকে সুরক্ষিত করে রেখেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থাপন করেছে অনেকগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা। রাস্তার পাশে খোলা অরক্ষিত অন্ধকার পরিবেশ বদলে করেছে ‘সবুজ ঐতিহ্যে অনন্য দেবপাহাড়’ শিরোনামে অসাধারণ এক উদ্যোগ, যা দেবপাহাড় এলাকার পরিবেশকে দিয়েছে এক ভিন্ন মাত্রা।
সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়ার সুরক্ষিত প্রবেশ দ্বার দিয়ে ঢুকতেই শানে বাঁধানো সার্কুলেশন চত্বর। অভ্যাগতদের দিকনির্দেশনা দিতে মূল ফটকের ঠিক পাশেই সেন্ট্রাল কনসিয়ার্জ। ডান থেকে বামে সন্নিবেশিত চতুর্দিক খোলা চারটি টাওয়ার– এলপিনিয়া, ব্লুবেল, ক্যামেলিয়া ও ডোনাবেলা।
টাওয়ার গুলো গড়ে উঠেছে একটি খোলামেলা প্লাজাকে কেন্দ্র করে। সেই প্লাজাতে হ্যাপি কমিউনিটির সাক্ষ্য হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে একটি সৃষ্টিশীল মনোগ্রাম। যার নিচে রয়েছে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং করে সংগৃহীত পানির সংরক্ষণাগার।
এলপিনিয়া টাওয়ারের নীচতলায় প্লাজা জোনের সবুজের সাথে মিতালি করে সাজানো হয়েছে একটি সিনিয়র্স লাউঞ্জ। এর নামকরণ করা হয়েছে লাইট হাউজ, একটি পরিবারের বাতিঘর হিসেবে যেমন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের বিবেচনা করা হয়, তেমনি গার্ডেনিয়া পরিবারের লাইট হাউজ হিসেবে পরিকল্পনা করা হয়েছে এই লাউঞ্জটি, যেখানে তাঁরা নিজেদের মতো করে একান্ত অবসর কাটাতে পারবেন। এর সুবিশাল দেয়ালজুড়ে অসাধারণ এক শিল্পকর্ম, যেন হারিয়ে যাওয়া দিন থেকে টেনে তুলে এনেছে সেই পাড়া–মহল্লার মায়াভরা দিনগুলো, সামাজিক সমপ্রীতির এক অনন্য রূপক এই চিত্রকর্মটি।
লাইট হাউজ থেকে কয়েক সিঁড়ি উঠে গেলে বাঁধানো বসার জায়গাটির ঠিক মাঝখানে একটি বকুল গাছ সবাইকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। তার পাশেই রয়েছে ‘এঙটেসি’ ছোট্ট কিন্তু খুবই কার্যকর একটি এম্ফিথিয়েটার, দু’প্রস্থ আসন সিঁড়িতে বসে উপভোগ করা যাবে আনপ্লাগড মিউজিক আসর বা অন্য কোনো চর্চা। এর লাগোয়া ওয়াকওয়ে, আউট ডোর জিমনেশিয়াম, সুবিশাল রাজকীয় দাবার ছক যে কাউকে মুগ্ধতার জালে জড়িয়ে নেবে মুহুর্তেই। জিম ও ওয়াকওয়ের পাশেই বসার ব্যবস্থা বা দোলনা যেন বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়েই করা।
ক্যামেলিয়া ও ব্লুবেলকে দুইপাশে রেখে গড়ে তোলা হয়েছে কোর্ট ইয়ার্ড। প্লাজা জোন থেকে স্বল্প উচ্চতার সিঁড়িটি দিয়ে চলে আসা যায়। ব্যাডমিন্টন কোর্ট, বাস্কেটবল হুপ, বাচ্চাদের খেলার জন্য অ্যাডভেঞ্চার পার্ক বা বাম্বল বি, ছোট বাচ্চাদের সাঁতার শেখার জন্য কিডস সুইমিং পুল, এয়ারকন্ডিশনড ক্লাব গার্ডেনিয়ায় আছে বিলিয়ার্ডের আয়োজন, আপনার একঘেঁয়ে লাগার কোনো উপায় নেই।
ক্যামেলিয়ায় গেলে নারী ও পুরুষদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা দু’টি জিমনেশিয়াম, বিট ব্যালেন্স এবং সোউল ডান্স। কমার্শিয়াল জিমের মতো স্টেট অফ দ্যা আর্ট ইকুইপমেন্ট দিয়ে পরিপূর্ণ, তাপানুকূল এবং টিভি ও মিউজিক সিস্টেম দিয়ে প্রস্তুত। একটি কন্ডোমিনিয়ামকে রিসোর্ট হয়ে উঠতে আর কি লাগে? কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
প্লাজা লেভেল থেকে দেখা যায় একটি সুবিশাল সিঁড়ি, যেন প্রাচীন কোনো রাজপ্রাসাদ থেকে তুলে আনা ঐতিহাসিক নিদর্শন। রাজসিক সেই সিঁড়ি বেয়ে ডোনাবেলার দোতলায় উঠে গেলে প্রথমেই হাতের ডানে পরবে রুচিশীল ইন্টেরিয়রে সজ্জিত এথেনিয়াম, এটি একটি লাইব্রেরি, অসাধারণ সব বইয়ের কালেকশন, যে কাউকে নিয়ে যাবে কল্পনার জগতে। সাথেই আছে ব্লু রে বা টিভি লাউঞ্জ।
আর একটু এগিয়ে গেলেই প্রয়োজনীয় আসবাবে সাজানো, তাপানুকূল দু’টি হল– সেলিব্রেশন পয়েন্ট ও কার্নিভাল হল, ২৫০ থেকে ৩০০ মানুষের পারিবারিক বা সামজিক অনুষ্ঠানাদি আয়োজনের জন্য যথেষ্ট। সেই রাজসিক সিঁড়ির ঠিক নিচে যে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার–সদাই করার জন্য কুইক–মার্ট রয়েছে সেটা বোধ হয় উল্লেখ করা হয়নি? এখানে একই সাথে লন্ড্রিও আছে। এই গার্ডেনিয়াকে রিসোর্টের পাশাপাশি জগার্স পার্কও বলা যায়। কেন?
ছাদের প্রসঙ্গ তো এখনও আসেইনি। চারটি টাওয়ারের দু’টি করে ছাদ, এলপিনিয়া আর ব্লুবেল এবং ক্যামেলিয়ায় ও ডোনাবেলা পরস্পরের সাথে সংযুক্ত, ফলে এত বিশাল ছাদ চট্টগ্রাম নগরীতে আর একটিই পাওয়া না যেতে পারে। নিজ চোখে না দেখলে এই ছাদগুলোর যুঁতসই বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা দুরুহ। এ যেন এক জ্যামিতিক সৃষ্টি, স্থাপত্যশৈলীতার অনবদ্য সাক্ষর। একে পার্ক বলা যাবে নাকি প্রকৃতির নান্দনিকতা প্রকাশের কোনো অপার পসরা বলা হবে তা এখনকার অধিবাসীরাই শুধু বলতে পারবেন। বার বি কিউ জোন, পার্টি পার্লার, দোলনা, সবুজ ঘাসের গালিচা, পারিবারিক আড্ডাকেন্দ্র, ইয়োগা ডেক, ওয়াকওয়ে, শতরঞ্জি পুষ্পরাজি, পাখিদের কলতান, সুর্যোদয় বা সুর্যাস্ত কি নেই এখানে? সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া, এই নগরীর গর্ব, এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।