দুই বছরেরও বেশি সময় পর আবার টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর এবারের সিরিজে বাংলাদেশ বলতে গেলে একেবারে নতুন একটি দল নিয়ে ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হচ্ছে। দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের কেউই নেই। এখনো টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া সাকিব এবং মুশফিক নেই দলে। সাকিব খেলছেন না এই টেস্ট। মুশফিক রয়েছেন ইনজুরিতে। দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও নেই ইনজুরির কারণে। তাই মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে তরুণ এই দলটি লড়াই করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ দলের বর্তমান কোচ ফিল সিমন্স একজন ক্যারিবীয়ান। দেশটির মাঠ, উইকেট ও আবহাওয়া সবই তার নখ দর্পণে। সেটাই হয়তো বড় ভরসা হয়ে থাকছে বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু লড়াইটাতো মাঠের।
সম্প্রতি ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই সিরিজের চারটি টেস্টেই হেরেছে টাইগাররা। এই দুটি হার অবশ্যই বেশ পীড়া দায়ক বাংলাদেশের জন্য। ভারতের কাছে এক টেস্টে দুই দিনে হেরেছে আর নিজেদের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এক টেস্টে হেরেছে তিন দিনেরও কম সময়ে। তবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক বলছেন এটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট। তবে সে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আজ যখন এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে নামবে বাংলাদেশ দল তখন তাদের চোখের সামনে ভেসে উঠবে বিভীষিকাময় এক দৃশ্য। যেটি এই মাঠে ঘটেছিল ২০০৮ সালে। সেবার সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল। যা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সবচাইতে কম রানে অল আউট হওয়ার রেকর্ড। তবে সে সব অতীত নিয়ে ঘাটতে চান না টাইগার অধিনায়ক। তার লক্ষ্য নতুন করেই পথচলা শুরু করা। এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পৌঁছে দুই দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। যেখানে দলের টপ অর্ডার ব্যাটাররা ভাল করতে না পারলেও মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররা বেশ ভাল করেছে। তবে সবচাইতে আশার কথা হচ্ছে, এই প্রস্তুতি ম্যাচে বোলাররা দারুণ করেছে। স্পিনার হাসান মুরাদ করেছেন হ্যাটট্রিক। এছাড়া পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম এবং নাহিদ রানারাও দারুণ বল করেছেন। তাই খানিকটা হলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন টাইগার অধিনায়ক তার বোলারদের নিয়ে। তবে যেহেতু দলের ব্যাটাররা বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যাটাররা লম্বা সময় ধরে রান খরায় ভুগছে তাই তাদের রানে ফেরাটা খুব বেশি জরুরি মনে করছেন দলের অধিনায়ক।
টপ অর্ডারে সাদমান, জাকির, লিটন, মোমিনুলরা পারছেন না ভাল একটা শুরু করতে। মিডল অর্ডারে যেহেতু সাকিব, মুশফিক, শান্ত নেই তাই জাকের আলি, শাহাদাত দিপু, মাহিদুল ইসলামদের দায়িত্বটা নিতে হবে। যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণের বিপক্ষে কাজটা বেশ কঠিন। কিন্তু নতুন শুরুর পথে বাংলাদেশ দল সব কঠিনকে জয় করতে চায়। আর কাজটা আসলে করতেই হবে বাংলাদেশকে।
নিজেদের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হারলেও বাংলাদেশকে হারিয়ে নিজেদের আত্নবিশ্বাস ফিরে পেতে চায় ক্যারিবীয়ানরা। আর সে জন্য তারাও মরিয়া হয়ে থাকবে সিরিজ জেতার ব্যাপারে। দুই দলের মধ্যকার পরিসংখ্যানও কথা বলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে। দুই দল টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছে ২০ বার। যেখানে বাংলাদেশের জয় কেবল ৪টি। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১৪টি। দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। বাংলাদেশ দল চাইছে পরিসংখ্যানকে মিথ্যে প্রমাণ করতে। আর সে জন্য মাঠে নিজেদের সেরাটাতো দিতেই হবে সাথে প্রতিপক্ষকে থামাতে হবে সব বিভাগেই। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় শুরু হবে ম্যাচটি।